বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, সরকার হটাতে এবার ভিন্ন প্রক্রিয়ায় আন্দোলন হবে। এই যে মামলা-মোকাদ্দমা, এই যে গোলাগুলি, এতো সহজেই আমরা ছেড়ে দেবো না।
সোমবার(১২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির শাহবাগ-রমনা থানা জ্বালানি তেল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি এবং ভোলায় নুরে আলম, আব্দুর রহিম এবং নারায়ণগঞ্জে শাওন হত্যার প্রতিবাদে আয়োজিত সমাবেশে বিএনপির সিনিয়র নেতা এমনটা জানান।
মির্জা আব্বাস বলেন, আপনারা ভাবছেন, এরশাদের সময় আন্দোলন হয়েছে একরকম- ওটা ছিল এক প্রক্রিয়া। এখন যে আন্দোলন হচ্ছে, সুতরাং আমরা ভিন্ন প্রক্রিয়া নেব। আন্দোলনের ভিন্ন রূপ হবে, আন্দোলনের ভিন্ন কায়দা হবে। আন্দোলন কখনো একরকম চলে না, অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, এই সরকার ক্ষমতায় থাকলে নিত্যপণ্য, চাল-ডাল-তেলের দামের যে ঊর্ধ্বগতি, এটা আর কোনোদিন কমবে না। এদেরকে সরাতে হবে, এদের ক্ষমতা থেকে হটাতে হবে। যে আন্দোলন শুরু হয়েছে, আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করা না পর্যন্ত এই আন্দোলন শেষ হবে না। সরকার বিএনপিকে বড় জায়গায় সমাবেশ করতে দেয় না।
আমরা একদিন ঢাকা শহরের প্রতিটি অলিতে-গলিতে মিছিল করব জানিয়ে তিনি বলেন, সেদিন আপনাদের অবস্থা কী হয় আমরা দেখবো। রাজপথ আমরা কিন্তু আপনাদের হাতে ছেড়ে দেবো না। রাজপথ আমরা দখল করবো। সময় এসে গেছে। বিএনপি নেতারা, ছাত্রদল নেতারা, যুবদল নেতারা গুলি খাওয়া শিখে গেছেন। সুতরাং ভয়ের কোনো কারণ নেই। বুক পেতে দেবো, গুলি খাবো কিন্তু রাজপথ ছেড়ে যাবো না, এটা আমাদের শপথ।
মির্জা আব্বাস বলেন, সামিট গ্রুপের আজিজ খান, আওয়ামী লীগের ফারুক খানের ভাই, আপনারা সবাই জানেন। সেদিন দেখলাম সিঙ্গাপুরে বড় ধনীদের মধ্যে একজন। এরকম গরীব দেশের যে কত ধনী আছে যারা বিদেশে থাকে, দেশে টাকা আছে। কেন? কয়েকদিন আগে না আপনারা তাদেরকে ছাড় দিলেন যে, বিদেশ থেকে টাকা আনলে তাদের কর ছাড় দেওয়া হবে। টাকা কি এসেছে বলতে পারবেন? আসেনি।যারা বিদেশে টাকা নিয়ে গেছে এখন সেখানে তাদের জবাব দিতে হচ্ছে যে, এই টাকার ট্যাক্স কই? ট্যাক্স দিয়েছেন? দেননি। তাহলে টাকাটা হালাল হচ্ছে না, এই টাকাটা জায়েজ করা যাচ্ছে না।
তিনি বলেন, এই টাকাটা জায়েজ করার জন্য তাদের একটা সুযোগ দেওয়া হলো, বাজেটে এই ছাড় দেওয়া হয়েছে, অর্থাৎ বিদেশে যদি তাদের জিজ্ঞেস করা হয় তখন তারা বলবে যে, আমরা দেশে ট্যাক্স দিয়ে এসেছি। এই হচ্ছে সরকারের অবস্থা।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর পানি ন্যায্য হিস্যার বিষয়ে কোনো আলোচনা না হওয়ায় কঠোর সমালোচনা করেন তিনি।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম-আহ্বায়ক লিটন মাহমুদের সভাপতিত্বে এবং সদস্য এম হান্নানের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, কেন্দ্রীয় নেতা ফজলুল হক মিলন, মীর সরফত আলী সপু, কাজী রওনাকুল ইসলাম টিপু, মহানগর দক্ষিণের রফিকুল আলম মজনু, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।