এস এম সাইফুল ইসলাম, প্রতিনিধি: কওমী মাদরাসার শিক্ষাবোর্ড ‘বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়্যাহ বাংলাদেশ’ থেকে আওয়ামী দোসরদের অপসারণ ও বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে সম্মিলিত কওমি মাদরাসা ফোরাম “সচেতন কওমি ছাত্রসমাজ” ।
শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) বিকাল ৩টায় রাজধানীর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকারম প্রাঙ্গণে এই বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে দ্রুত শিক্ষার্থীদের পালস্ বুঝার অনুরোধ করে বক্তারা বলেন, আজ আমরা ন্যায় এবং অন্যায়ের মাঝামাঝি অবস্থানে রয়েছি। আমাদের আশংকা হয়, যদি অন্যায়কে জিতিয়ে দেওয়া হয় তাহলে শুধু কওমি অঙ্গন না; পুরো দেশ ও জাতিকে খেসারত দিতে হবে। আমাদের স্পষ্ট দাবি ফ্যাসিবাদ ও তার দোসরদের ঘিরে, এখানে কোন ব্যক্তি টার্গেট না। কিন্তু আমার ঘর, পরিবার, মাদরাসা, মসজিদ যদি ফ্যাসিবাদের আঁকড়ায় পরিণত হয় তাহলে শুধু সেই পচনধরা জায়গা না; পুরোটাই সংস্কার করা আবশ্যক।
বক্তারা বলেন, বেফাকের দায়িত্বশীল পদে দাঁড়ি-টুপির আড়ালে যে ফ্যাসিস্টের দোসররা ঘাপটি মেরে বসে আছে। তাদেরকে আমরা বারবার সতর্ক করার পরেও তাদের আদালতে দলিল প্রমাণ পেশ করার পরেও আমাদের নীতি নির্ধারকেরা কেন কোন পদক্ষেপ নিতে পারেনি? তারা পুরো জাতির কাছে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। আমরা জানতে পেরেছি তথ্য ও প্রমাণের ভিত্তিতে বেফাকের দায়িত্বশীলবৃন্দ দূর্নীতির আঁকড়া খুলেছে এই সর্বোচ্চ শিক্ষাবোর্ড। সামান্য মতের বিরোধ হলে কোন রুলস্ ও বিচার ছাড়াই যে কাউকে বহিষ্কার করা কোন আইন বা সংবিধানে আছে সেটি জাতির কাছে প্রশ্ন করে গেলাম? যে খাস কমিটি মজলিসে আমেলার সহযোগী ছিল, সেটি কিভাবে নীতি নির্ধারকের টেবিল পরিচালনা করে সেটি সাংবাদিক ভায়েরা তাদেরকে জিজ্ঞেস করুন।
বক্তারা আরও বলেন, আমরা ইতিমধ্যে দেখেছি ওবায়দুর রহমান খান নদভী টঙ্গী ইজতেমার মাঠে হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত। যার প্রমাণ রাজসাক্ষী সহ বেফাকের পক্ষের তদন্ত কমিটির কাছে দিয়েছে সমন্বয়ক তারেকুল ইসলাম। বেফাক ২৪ঘন্টার সময় নিয়েও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে গাদ্দারী করেছে। ফ্যাসিবাদের মানদন্ড হল তারা নিজেরাই প্রমাণ। আপনারা জেনে থাকবেন রাজধানীর বৃহৎ একটি মাদরাসার শিক্ষার্থীকে বিগত ফ্যাসিস্ট আমলে আওয়ামী লীগের মিছিলে খুন করা হয়। পরবর্তীতে গোটা দেশ বিচারের দাবিতে ফুসে উঠলে এই বেফাক কর্তৃপক্ষ তার পরিবারকে অর্থের লোভ দেখিয়ে আওয়ামী লীগকে শেল্টার দেয়। যা এখনো আমাদের মনের ভেতরে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। আলেমসমাজ সহ দেশবাসীর প্রতি সুস্পষ্ট বার্তা, আপনারা আর কত চুপ থাকবেন? কতক্ষণ নিরপেক্ষ অবস্থানে বসে থাকবেন? আল্লাহ কে ভয় করুন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কে হুশিয়ার করে বলে দিচ্ছি, আমরা বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। সাম্যের দেশ গড়ার শপথ করেছি। কোন আওয়ামী দোসর বেফাক সহ আমাদের নীতি নির্ধারকের চেয়ারে থাকতে পারে না, থাকে আমরা দিবো না।
কঠোর কর্মসূচীর হুশিয়ারি দিয়ে বক্তারা বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসরদের বহিস্কারাদেশের ক্ষেত্রে যদি বিলম্ব হয় তাহলে আমরা ধরে নেব বেফাকে এখনো ফ্যাসিবাদের দোসররা প্রভাব বিস্তার করছে। সেক্ষেত্রে আমাদের শিক্ষাবোর্ডকে ফ্যাসিবাদ মুক্ত করতে আমরা পরবর্তীতে আরো কঠোর কর্মসূচী ঘোষণা করতে বাধ্য হবো।