মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরের বুকিত বিন্তাং এলাকায় মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে হাজির হন মালয়েশিয়া প্রবাসী হারুন অর রশিদ। ‘আ থিন ভয়েস অফ মাইগ্রেন্ট ওয়ার্কারস’ শীর্ষক এ সম্মেলনের আয়োজন করেন তিনি নিজেই।
হারুন ২০১৮ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর মালয়েশিয়ায় বৈধভাবে কাজের জন্য প্রবেশ করেন। তিনি ফেল্ক্রা বারহেড নামের একটি পাম বাগানে কাজ শুরু করেন। দীর্ঘ ছয় বছর কঠোর পরিশ্রম করে, জঙ্গলময় পরিবেশে থাকা সত্ত্বেও, পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা উন্নত করার জন্য তিনি তার দায়িত্ব পালন করেন। তবে তার ভিসা নবায়ন নিয়ে সেখানকার কর্মকর্তারা প্রতিশ্রুতি দিলেও হঠাৎ করে তাকে দেশে ফিরে যাওয়ার জন্য বলা হয়, এমনকি কোনো পূর্বাভাস ছাড়াই তার পাসপোর্টে ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়া বিমান টিকেট ধরিয়ে দেওয়া হয়।
অবৈধ অভিবাসী হিসেবে পরিণত হওয়ার পর হারুন স্থানীয় কোম্পানির কাছে সাহায্য চাইলেও কোনো সাড়া পাননি। বাধ্য হয়ে তিনি আন্তর্জাতিক শ্রম ও মানবাধিকার সংস্থায় অভিযোগ দায়ের করেন, যদিও কোনো সহায়তা পাননি। এরপর তিনি নিজের দেশের দূতাবাসের কাছে সহায়তা চেয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য জমা দেন, কিন্তু তাও ফলপ্রসূ হয়নি। শেষ পর্যন্ত হারুন সিদ্ধান্ত নেন দেশে ফিরবেন।
সংবাদ সম্মেলনে হারুন তার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, ‘কোনো ধরনের ক্ষতিপূরণ আমি চাই না, তবে আমার একটাই প্রশ্ন – আমি বৈধভাবে এখানে এসেছি, কেন আমাকে অবৈধ হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হলো? আমি তো কোনো অপরাধ করিনি।’
হারুনের এই ঘটনা কেবল তার একার নয়, বরং মালয়েশিয়ায় লাখ লাখ প্রবাসী শ্রমিকের একই দুর্দশার পরিচায়ক। সরকার জানলেও এর কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি, ফলে প্রবাসী শ্রমিকদের অধিকার রক্ষায় কেউ সঠিকভাবে কাজ করছে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এ সময় হারুন অন্যান্য প্রবাসী শ্রমিকদের সমর্থন চান এবং বলেন, ‘দেশে ফিরেও আমি প্রবাসীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমার লড়াই চালিয়ে যাব।’ সংবাদ সম্মেলনে হারুনের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন মালয়েশিয়া প্রবাসী জাহাঙ্গির হাওলাদার ও হান্নান মল্লিক।
এটি প্রবাসী শ্রমিকদের জন্য একটি বড় সংকটের চিত্র তুলে ধরে এবং ভবিষ্যতে আরও সতর্কতার সঙ্গে তাদের অধিকার রক্ষায় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানায়।