বিশ্বে গণতান্ত্রিক পরিস্থিতি নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে কর্তৃত্ববাদী দেশের তালিকায় বাংলাদেশের স্থান হয়েছে। ‘দ্য গ্লোবাল স্টেট অব ডেমোক্রেসি ২০২২’ শীর্ষক এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সুইডেনভিত্তিক গবেষণা সংস্থা দ্য ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর ডেমোক্রেসি অ্যান্ড ইলেকটোরাল অ্যাসিসট্যান্স (আইডিইএ)।
গত বুধবার প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ ছাড়াও চীন, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, আফগানিস্তান, উজবেকিস্তান, কম্বোডিয়া ও কাজাখস্তানকে কর্তৃত্ববাদী শাসনের দেশের তালিকায় রাখা হয়েছে। বলা হয়েছে, এখানে মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় বাধা দেওয়া হচ্ছে।
মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় বাধা দেওয়ার ক্ষেত্রে দেশগুলোতে যেসব আইন করা হয়েছে, সেই তালিকায় বাংলাদেশের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন রয়েছে। বলা হয়েছে, অপপ্রচারের বিরুদ্ধে লড়াই এবং সাইবার হামলার বিরুদ্ধে সুরক্ষার কথা বলে এই আইনের আওতায় অনলাইন কনটেন্টকে নিশানা করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের পর থেকে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অন্তত ১৫টি দেশ বাক্স্বাধীনতা দমনে, বিশেষত অনলাইনে মতপ্রকাশ ঠেকাতে এ ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে। এ অঞ্চলে গণতন্ত্র সংকুচিত হচ্ছে, পক্ষান্তরে কর্তৃত্ববাদী শাসন সংহত হচ্ছে। এ অঞ্চলের মাত্র ৫৪ শতাংশ মানুষ গণতান্ত্রিক পরিবেশে আছে। আফগানিস্তান ও মিয়ানমার গণতন্ত্রের পতনের সবচেয়ে বড় উদাহরণ হলেও ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন ও তাইওয়ানের মতো দেশেও গণতন্ত্র ঝুঁকিতে আছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের গণতান্ত্রিক দেশগুলোর অর্ধেকেই গণতন্ত্র দুর্বল হচ্ছে। ইউক্রেন যুদ্ধ ও অর্থনৈতিক সংকট এটাকে ত্বরান্বিত করছে। গণতান্ত্রিক পরিবেশ সবচেয়ে বেশি মাত্রায় খারাপ হয়েছে এমন দেশের তালিকায় এবার যুক্তরাষ্ট্র যুক্ত হয়েছে। এ তালিকায় অন্য দেশগুলো হলো ব্রাজিল, হাঙ্গেরি, ভারত, মরিশাস ও পোল্যান্ড।
আইডিইএর মহাসচিব কেভিন কাসাল–জামোরা এএফপিকে বলেছেন, মহামারি ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক সংকটে বিশ্বব্যাপী গণতন্ত্র দুর্বল হতে দেখা যাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘এর অর্থ নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে।
আইনের শাসন খর্ব হচ্ছে। নাগরিক সমাজের কথা বলার সুযোগ সীমিত হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে যা দেখছি, তাতে আমি খুবই উদ্বিগ্ন।’