শরীয়তপুর প্রতিনিধি:
শরীয়তপুরে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত সরকারি অনুষ্ঠানে আহত জুলাই যোদ্ধাদের ফুল ও উপহার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের কর্মচারীদের মাধ্যমে তুলে দেওয়ার ঘটনায় তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন তাঁরা। এ ঘটনায় জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে বৈষম্যের অভিযোগ তুলেছেন আহত যোদ্ধারা।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) সকালে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে শরীয়তপুর পৌরসভার সম্মেলন কক্ষে জুলাই শহীদদের স্মরণে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক তাহসিনা বেগম এবং সঞ্চালনায় ছিলেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইলোরা ইয়াসমিন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম, সিভিল সার্জন ডা. মো. রেহান উদ্দিনসহ জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, শহীদ পরিবারের সদস্যদের হাতে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার নিজ হাতে উপহার ও সম্মাননা তুলে দেন। কিন্তু আহত জুলাই যোদ্ধাদের ক্ষেত্রে সেই সম্মান প্রদর্শনের ভিন্নতা লক্ষ্য করা যায়। তাঁদের হাতে উপহার ও ফুল তুলে দেন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের কর্মচারীরা, যেটি অনেকের কাছে অপমানজনক ও অসম্মানজনক বলে মনে হয়েছে।
জুলাই ওয়ারিয়র্স জেলা শাখার সদস্য সচিব আব্দুর রহমান ডালিম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমরা আশা করেছিলাম জেলা প্রশাসক নিজ হাতে আমাদের শুভেচ্ছা ও উপহার দেবেন। কিন্তু আমাদের প্রতি সেই সম্মান দেখানো হয়নি। এটা খুবই দুঃখজনক ও হতাশাজনক।”
একজন নারী জুলাই যোদ্ধা জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, “যারা শহীদ হয়েছেন, তারা আমাদের সহযোদ্ধা। তাঁদের পরিবারের প্রতি ডিসি সম্মান দেখালেও আমাদের যেন অবহেলার দৃষ্টিতে দেখা হয়েছে। আমরা এ বৈষম্য মানতে পারি না।”
ফাতেমা ইয়াসমিন নামের আরেক আহত যোদ্ধা বলেন, “আমাদের হাতে ফুল ও উপহার দিয়েছে পিয়ন। আগেও এরকম হয়েছে। এমনকি অনেকে বলেছে, হাতে নয়—ফুল ফেলে দিয়ে গেছে। এই আচরণ আমাদের কষ্ট দেয়। আমরা কি সম্মান পাওয়ার যোগ্য নই?”
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক তাহসিনা বেগম বলেন, “ফুল দেয়ার সময় নেজারত ডেপুটি কালেক্টরের (এনডিসি) নেতৃত্বে তা করা হয়েছে। আমি নিজেও উপস্থিত ছিলাম। অভিযোগের বিষয়টি সঠিক নয়।”
তবে আহত যোদ্ধারা বলছেন, কেবল উপস্থিত থাকলেই যথেষ্ট নয়। তাঁদের প্রতি সম্মান ও স্বীকৃতি যথাযথভাবে প্রদর্শন করা হয়নি বলেই তাঁরা মনে করেন।