ইসলাম বিদ্বেষী বিতর্কিত ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে দীর্ঘ ১২ বছর ধরে কারাগারে থাকা ইসলামপন্থী ব্লগার শাফিউর রহমান ফারাবীসহ সকল মাজলুম, নিরপরাধ-নিরীহ কারাবন্দীদের মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারসহ ৫ দফা দাবি আদায়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বৈষম্যহীন কারামুক্তি আন্দোলন।
শুক্রবার (৩০ মে) বা’দ জুম’আ জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম এর উত্তর গেইটে এই বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির সভাপতি ও হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ-এর কেন্দ্রীয় যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা মীর ইদরীস নদভী।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, বিগত সরকারের আমলে কথিত ‘জঙ্গিবাদবিরোধী অভিযানের’ নামে অনেক দ্বীনদার ও সাধারণ মুসলমানকে গায়েবি মামলায় গ্রেপ্তার ও দণ্ডিত করা হয়েছে। বর্তমানে অনেকের সাজা শেষ হলেও তারা মুক্তি পাচ্ছেন না। কেউ কেউ নির্দোষ প্রমাণিত হয়েও কারাগারে রয়েছেন। অতিশীঘ্রই শফিউর রহমান ফারাবী, মাওলানা আবু তাহের, মুফতী আব্দুল হাই, মাওলানা শেখ ফরিদসহ আরও যারা কারাগারে আছেন সকলকে মুক্তি দিতে হবে।
বক্তারা আরও বলেন, বিচারব্যবস্থাকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হলে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। যারা মতপ্রকাশের স্বাধীনতার নামে ধর্ম অবমাননা করে, তাদের ব্যাপারে নীরবতা থাকলেও যারা জুলুমের বিরুদ্ধে কথা বলেন, তাদের ‘জঙ্গি’ বলা হচ্ছে।
সমাবেশ শেষে বিক্ষোভকারীরা বাইতুল মোকাররম থেকে মিছিল নিয়ে শাপলা চত্বরে যান। সেখানে সংগঠনের পক্ষ থেকে পাঁচ দফা দাবি ঘোষণা করা হয়। দাবিগুলো হলো : ১. শাফিউর রহমান ফারাবীসহ সকল দ্বীনদার বন্দীর মুক্তি। ২. মিথ্যা মামলার তদন্তে স্বাধীন কমিশন গঠন। ৩. সন্ত্রাসবিরোধী ও বিশেষ ক্ষমতা আইনের অপব্যবহার বন্ধে সংশোধন। ৪. বিচার বিভাগে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ। ৫. ধর্ম অবমাননার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ।
বৈষম্যহীন কারামুক্তি আন্দোলনের সেক্রেটারি মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম এর সঞ্চালনায় আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন তাওহীদের মুয়াজ্জিন খ্যাত মুফতী জসীম উদ্দিন রহমানি, খেলাফত আন্দোলন বাংলাদেশ এর আমীর মাওলানা হাবীবুল্লাহ মিয়াজী, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, প্রখ্যাত দাঈ ও বক্তা মুফতী মাহমুদুল হাসান গুনভী, মুফতী ফখরুল ইসলাম, লেখক ও চিন্তক আসিফ আদনান, ডা. মেহেদী হাসান ও মুফতি সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।
৫ দফা দাবি ঘোষণার পর দোয়ার মাধ্যমে কর্মসূচির সমাপ্তি ঘোষণা করেন নেতৃবৃন্দ। এসময় সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি চলমান থাকবে।