সম্প্রতি মালদ্বীপ বেইজিংয়ের দিকে ঝুঁকে পড়ায় ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে আশ্বস্ত করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
তিনি মঙ্গলবার বলেছেন, বাংলাদেশ চীনের কাছে নতি স্বীকার করবে না। কারণ বেইজিংয়ের কাছ থেকে নেওয়া ঋণের পরিমাণ জিডিপির মাত্র ১ শতাংশের কম।
বাংলাদেশ ও মালদ্বীপে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব সম্পর্কে ইন্ডিয়া টুডেকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মোমেন এসব কথা জানান।
ড. আব্দুল মোমেন বলেন, বাংলাদেশে চীনের খুব বেশি প্রভাব নেই। চীন একটি উন্নয়ন সহযোগী। তারা আমাদের কিছু প্রকল্পে সাহায্য করছে, হয় ঠিকাদার বা বিশেষজ্ঞ হিসেবে। কিন্তু আপনি যদি দেখেন আমরা চীন থেকে কত টাকা পেয়েছি, তা জিডিপির ১ শতাংশের কম। এটা তেমন কিছুই নয়।
সম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও ভারতকে নিয়ে মালদ্বীপের তিন মন্ত্রী ‘অবমাননাকর’ মন্তব্য করায় দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কে উত্তেজনা দেখা গিয়েছে। ঘটনার পর ওই তিন মন্ত্রীকে বরখাস্তও করেছে মালদ্বীপ সরকার।
দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা সম্পর্কে জানতে চাইলে মোমেন বলেন, ‘আমাদের সমাজে আমাদের নিজস্ব মূল্যবোধের বিচারে আমরা সাধারণত অন্যদের সম্মান করি এবং আমরা কোনো কিছু করার আগে নেতাদের সমর্থন প্রত্যাশা করি। তাই আমরা মনে করি অন্যের মর্যাদা ও সরকারকে আমাদের সম্মান করা উচিত।’
চীনপন্থী মোহাম্মদ মুইজ্জু মালদ্বীপে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে নয়াদিল্লি ও মালের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অবনতি হতে থাকে। বর্তমানে তিনি পাঁচ দিনের চীন সফরে রয়েছেন।
আবদুল মোমেন বলেন, বাংলাদেশও চীনের কাছে ঋণী হয়ে যাচ্ছে বলে অপপ্রচার চলছে। একটি দেশের বৈদেশিক ঋণ ৫৫ শতাংশের বেশি হলে অন্য দেশের কাছে ঋণী হতে পারে। আমাদের মোট ঋণের পরিমাণ মাত্র ১৩.৬ শতাংশ। ভারতের উদ্বেগের কিছু নেই। চীন কেবলই বন্ধু এবং উন্নয়ন সহযোগী। আমরা কোনো সাহায্য বা তহবিল গ্রহণের ক্ষেত্রে খুবই বিচক্ষণ। তাই জনগণের ভয় পাওয়া উচিত নয় যে বাংলাদেশ চীনের কাছে নতি স্বীকার করবে।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঢাকার সঙ্গে নয়াদিল্লির ভালো সম্পর্ক রয়েছে, কিন্তু মুইজ্জু রাষ্ট্রপতি হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে মালে সমীকরণ বদলে গেছে। মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতিও প্রথম ভারত সফরের প্রথা ভেঙেছেন। এই পদক্ষেপকে অনেকেই নয়াদিল্লির প্রতি অবজ্ঞা হিসেবে দেখেন।