শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, একটি চিহ্নিত গোষ্ঠী নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে। মিথ্যাচার, অপপ্রচার দিয়ে অগ্রযাত্রাকে বন্ধ করা যাবে না।
বৃহস্পতিবার(৯ ফেব্রুয়ারি) আশুলিয়ায় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সমাবর্তন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের প্রতিনিধি হিসেবে তিনি সেখানে বক্তব্য রাখেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ভারতের হিমাচল প্রদেশের শুলিনী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক অতুল খোসলা। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. সবুর খান, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এম লুৎফর রহমান প্রমুখ৷
দীপু মনি বলেন, একটি চিহ্নিত গোষ্ঠী, যাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে, কিন্তু তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে বাংলাদেশের শিক্ষাক্রমের বইগুলো পড়ানো হয় না, তাঁরা ব্যাপকভাবে এই বইগুলো নিয়ে অপপ্রচারে নেমেছেন। ভুলত্রুটি যা রয়েছে, তা সংশোধন করা হচ্ছে। কিন্তু যে বিষয় বইয়ে নেই, যে ছবি বইতে নেই, তা মিথ্যাচার করে, ফটোশপ করে, সম্পাদনা করে বইয়ের অংশ বলে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
তিনি বলেন, কদর্য ভাষায়, কুৎসিতভাবে, ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করা হচ্ছে ও হুমকি দেওয়া হচ্ছে। পাঠ্যবই নিয়ে যাঁরা অপপ্রচার চালাচ্ছেন, তাঁদের উদ্দেশ্য সৎ নয়। যাঁরা পাঠ্যবই নিয়ে বলছেন, তাঁদের উদ্দেশ্য যদি সৎ হতো, তাঁদের উদ্দেশ্য যদি হতো বইগুলো সংশোধন, তাহলে নিশ্চয় তাঁরা মিথ্যার আশ্রয় নিতেন না। কদর্য আচরণ করতেন না এবং হুমকি দিতেন না। এরা কারা? এরাই তারা, যারা পঞ্চাশের দশকে বলেছিল, নৌকায় ভোট দিলে বিবি তালাক হয়ে যাবে।
চিহ্নিত সেই গোষ্ঠীর কথা তুলে তিনি বলেন, এরাই তারা, যারা নব্বইয়ের দশকে বলেছিল, নৌকায় ভোট দিলে ফেনী পর্যন্ত ভারতের অংশ হয়ে যাবে, মসজিদে মসজিদে উলুধ্বনি হবে। এর কোনোটিই কিন্তু ঘটেনি। একই অপশক্তি নির্বাচনকে সামনে রেখে আবারও ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের অপচেষ্টা চালাচ্ছে। যেখানে বইতে সুস্পষ্টভাবে বলা আছে, মানুষ বানর থেকে হয়নি, সেখানে তাঁরা বলছেন যে বইতে নাকি বলা হয়েছে বানর থেকে মানুষ হয়েছে। এই মিথ্যাচার, অপপ্রচার কেন?
আরও যা যা বলেছে, তার প্রত্যেকটির জবাব আছে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কোনো ছবি, বিষয়বস্তু নিয়ে নিয়ে কারও আপত্তি থাকলে, এমনকি অস্বস্তি থাকলেও তা বিবেচনায় নেওয়া হবে। কিন্তু কদর্য ভাষা ব্যবহার করা হচ্ছে, ধর্মের দোহাই দিয়ে করছেন, কিন্তু সকল ধর্ম কী বলে? সকল ধর্ম বলে সত্য কথা বলতে। সকল ধর্ম, এমনকি আমাদের ধর্মেও বলা হয়েছে সত্যের সঙ্গে মিথ্যাকে মিশিও না। কিন্তু তারা মিথ্যাচার করছে, অপপ্রচার করছে, গুজব রটাচ্ছে।
দীপু মনি বলেন, যারা মন্দ কাজ করছে তাদের উদ্দেশ্য মন্দ, পথ মন্দ। আমরা নিশ্চয়ই থেমে থাকব না। ভালো কাজ যা করার, তা করব। আমাদের শিক্ষার্থীরা যাতে আনন্দের সঙ্গে শিখতে পারে, বয়স অনুযায়ী সঠিক জিনিস শিখতে পারে। তবে সমাজের যে বিষয়টি সংবেদনশীল, সেটি বিবেচনায় নেব, যেখানে সংশোধন করা দরকার, সেটি সংশোধন করব।
‘মিথ্যাচার, অপপ্রচার দিয়ে আমাদের অগ্রযাত্রাকে নিশ্চয়ই বন্ধ করা যাবে না। এসব অপপ্রচারগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করার আগে সত্যটা যাচাই করে নিন। বইগুলো ওয়েবসাইটে আছে, আপনার বাড়ির পাশে স্কুল আছে’, যোগ করেন শিক্ষামন্ত্রী।