ভৈরবে চোর-ছিনতাইয়ের উপদ্রব দিনে দিনে আরও বেড়েছে। এতে প্রশাসনের ব্যর্থতার দায় তুলে প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করেছে স্থানীয় বাসিন্দারা।
গতকাল শনিবার(২ আগস্ট) বিকেলে ভৈরবের দুর্জয় মোড় গোল চত্বরে এলাকায় স্থানীয় শতাধিক যুবক এ সমাবেশের আয়োজন করে। চুরি-ছিনতাই প্রতিরোধে পুলিশের ব্যর্থতার অভিযোগ এনে পুলিশের উদ্দেশ্যে শাড়ি ও চুড়ি দেওয়া হয়। আগামী দুই দিনের মধ্যে ভৈরবকে চুরিও ছিনতাই মুক্ত করতে পুলিশকে আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছে।
বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে, ছিনতাই বিরোধী যুবক সমাজের ব্যানারে ঢাকা সিলেট মহাসড়কে একটি মিছিল নিয়ে ভৈরব থানার সামনের গেটে গিয়ে অবস্থান নেয়। থানার গেটের সামনে অবস্থান নিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকে। পরে থানার ভিতরে গিয়ে থানার প্রধান ফটকের সামনে একটি শাড়ি এবং তার উপর চুরি রেখে দিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচির শেষ ঘোষণা করা হয়।
যুব সমাজের ব্যানারে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন আজহারুল ইসলাম রিদম, নূরে আলম নিলয়, মাওলানা শাহরিয়ার মোস্তাফারি, রিয়াদ ইসলাম, হান্নান আহমেদ হিমু সহ প্রায় শতাধিক যুবক।
আজহারুল ইসলাম রিদম জানান, ভৈরবে আমরা কেউ নিরাপদ নেই। প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও চুরি চিন্তার ঘটনা ঘটছে । ভৈরব থানা পুলিশ চুরি ও ছিনতাই রোধে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। এই শহরকে চুরি এবং ছিনতাই মুক্ত করতে না পারলে-আমরা থানার প্রতিটি পুলিশ সদস্যকে শাড়ি ও চুরি উপহার দিয়ে যাব।
যুব সমাজের আরেক সদস্য নূরে আলম নিলয় জানান, গত কয়েক মাসের মধ্যে এটি আমাদের অষ্টম ছিনতাই বিরোধী বিক্ষোভ। প্রশাসন যদি চুরি ছিনতাই নির্মূল করতে না পারে তাহলে প্রশাসনের বিরুদ্ধে আমরা আন্দোলনের জন্য নামবো।
ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ খন্দকার ফুয়াদ রুহানি বলেন, ছাত্র ও যুব সমাজ চুরি-ছিনতাই রোধে থানার সামনে বিক্ষোভ করা খুবই দুঃখজনক। দ্রুততম সময়ের মধ্যে থানার সকল অফিসার ও সকল পুলিশ সদস্যদেরকে নিয়ে, ভৈরব কে চুরি ও ছিনতাই মুক্ত করবো।
তিনি বলেন, গত রমজান থেকে এ পর্যন্ত আমরা দুইশো এর অধিক চোর ও ছিনতাইকারীদের আটক করে আদালতে পাঠিয়েছি। তারা আবার সপ্তাহখানেকের মধ্যেই আদালত থেকে জামিনে বেরিয়ে আসে। পুনরায় একই অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। এতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক ব্যবসায়ী বলেন, পুলিশ চোর ছিনতাইকারীদের আটক করে আদালতে প্রেরণ করলেও, এইসব চোর-ছিনতাইকারীদের বাকিতে আদালত থেকে জামিনে বের করতে এক শ্রেণীর উকিল প্রস্তুত থাকেন। তাই তারা দ্রুত জামিনে বেরিয়ে এসে পুনরায় অপরাধে জড়িয়ে পড়ে।
স্থানীয়রা জানান, ভৈরবের চুরি-ছিনতাই রোধে, পুলিশ সদস্যের সংখ্যা বর্তমান অবস্থা থেকে দ্বিগুণ করতে হবে এবং টহল জোরদার করতে পুলিশের গাড়ি সংখ্যাও বাড়াতে হবে। তাহলে ভৈরবে চুরি-ছিনতাই কমে আসবে।