যারা ভোটকেন্দ্র দখল করার জন্য নিয়ত করে বসে আছেন, বাক্স দখল করার জন্য নিয়ত করে আছেন, তাদের স্বপ্ন ভঙ্গ হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন।
শনিবার (২৩ আগস্ট) সকাল ১০টায় রাজশাহী আঞ্চলিক লোকপ্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘যারা মনে করেন, কেন্দ্র দখল করে জিতব, বাক্স দখল করে জিতব,তাদের স্বপ্ন ভঙ্গ হবে। এছাড়া অস্ত্রের জোরে জেতার চেষ্টা করলে তা ব্যর্থ হবে এবং ভোটকেন্দ্র দখল হলে পুরো ভোট বাতিল করা হবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা সেভাবেই কাজ করছি। প্রত্যেকটা অফিসারকে সেভাবে নির্দেশনা দিচ্ছি। আগে যে ধরনের হুকুম যেত; আমাদের হুকুম যাবে অ্যাজ পার রুল। একদম নিরপেক্ষভাবে যাতে আমাদের অফিসাররা কাজ করেন, সেই নির্দেশনা থাকবে। অন্যায় কোনো হুকুম আমাদের তরফ থেকে যাবে না। অন্যায় কোনো আবদার আমরা কারও কাছ থেকে শুনব না।’
এসময় সিইসি আরও জানায়, ভোটার তালিকা হালনাগাদ হয়েছে এবং ভোটের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম কেনাকাটা চলছে। সীমানা নির্ধারণের খসড়া প্রকাশ করা হয়েছে এবং আগামী রোববার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত নির্বাচনী সীমানা পুনর্নির্ধারণের শুনানি চলবে।
নির্বাচন পদ্ধতি বিতর্ক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আনুপাতিক বা পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন সংবিধানে নেই। তাই সংবিধানের বাইরে কমিশন যেতে পারে না। এছাড়া রাজনৈতিক দলগুলো এ নিয়ে বিতর্ক করছে, তবে আইন পরিবর্তন হলে তখন ব্যবস্থা নেয়া যাবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি প্রসঙ্গে সিইসি বলেন,‘আমরা এবার সেনাবাহিনীকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংজ্ঞার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছি। আগে যে স্ট্রাইকিং ফোর্স ছিল, উইদ আউট স্ট্রাইক। প্রয়োজনের সময় নাম দিয়েছিল স্ট্রাইকিং ফোর্স। আগে আমরা তিনটা নির্বাচনে দেখেছি তো। দে আর নেভার স্ট্রাইক, দেখানোর জন্য করেছে। কিন্তু এবার স্ট্রাইক করা হবে। আমাদের সেনাবাহিনী যাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংজ্ঞার ভেতরে অন্তর্ভুক্ত হয়, সে উদ্যোগ নিয়েছি। সেনা, নৌ, বিমান বাহিনী, কোস্টগার্ড, সবাইকে আমরা ইনভলভ করব। সব বাহিনী সম্পৃক্ত থাকবে।’
বিগত নির্বাচনগুলোতে ভোট জালিয়াতিতে জড়িত নির্বাচন কর্মকর্তারা ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দায়িত্বে থাকবেন কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘ভাই, আমার তো পাঁচ হাজার ৭০০ কর্মকর্তা। কোথায় পাঠিয়ে দিব এদেরকে! তাদের মধ্যে যারা স্বপ্রণোদিত হয়ে স্বউদ্যোগে ভোট জালিয়াতিতে জড়িত ছিল, তাদেরকে তো অবশ্যই দায়িত্বে রাখব না।’
এছাড়া আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে সিইসি জানান, বর্তমানে দলটির বিচার চলছে। বিচার চলাকালে তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। “দেখা যাক, বিচারে কী হয়।
এসময় আগামী ফেব্রুয়ারির রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার জোর প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি।
পরে সেখানে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিষয়ে রাজশাহী অঞ্চলের নির্বাচন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতিবিনিময় করেন। আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় এ সভার আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন।