সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার প্রতি ভোটচুরির অভিযোগ এনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘১৯৯৬ সালে খালেদা জিয়া ভোট চুরি করে ক্ষমতায় আসতে চেয়েছিল। বাংলার জনগণ তাকে বাধ্য করেছিল ক্ষমতা ছাড়তে। ভোট চুরি করলে বাংলাদেশের মানুষ কখনো মেনে নেয়নি, মেনে নেবেও না। পরে আবার যখন নির্বাচন দেয়, সেই নির্বাচনে আমরা জয়লাভ করেছি।
আজ শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে আওয়ামী লীগের ২২তম সম্মেলনে দেওয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১০টা হুন্ডা, ২০টা গুন্ডা, নির্বাচন ঠান্ডা-এই নীতিই ছিল বিএনপির আমলে। আমরা পরে একটা নির্বাচনকালীন সরকারের প্রস্তাব দিই। ছবিসহ ভোটার তালিকা, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স, ‘আমার ভোট আমি দেবো, যাকে খুশি তাকে দেবো’ স্লোগান; এগুলো আমরাই চালু করেছি।
তিনি বলেন, আমরা নির্বাচন কমিশন গঠন করে দিয়েছি। তাদের আর্থিক সক্ষমতা তাদের হাতে দিয়ে দিয়েছি। তারা যাতে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে, সেই সুযোগ করে দিয়েছি। সবাইকে ভোটার আইডি কার্ড করে দিয়েছি। নির্বাচন কমিশন নিয়োগ আইন-২০২২ করে দিয়েছি। ’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে অনেকে বিতর্কিত কথা বলে। কিন্তু আমরা নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করি না। আমরা নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন করে দিয়েছি। প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে তাদের আর্থিক সক্ষমতা নিজেদের দিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা ভোটার আইডি কার্ড করে দিয়েছি। যেন ভোটে কারচুপি না হয়। ’
পদ্মা সেতু নির্মাণের সময় দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দুর্নীতি করে টাকা বানাতে আসিনি। আমার বাবা রাষ্ট্রপতি ছিলেন, প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। আমি চার চারবারের প্রধানমন্ত্রী। আমাদের পরিবার দুর্নীতিই যদি করতো, তাহলে দেশের মানুষকে কিছু দিতে পারতাম না। আমরা দেশের মানুষকে দিতে এসেছি, মানুষের জন্য করতে এসেছি। একারণে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করবে, অন্তত আমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের মেয়ে হিসেবে এটা মেনে নিতে পারি না। ’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যাতে সরকারে না আসতে পারে, অনেক চেষ্টা করেছে। কিন্তু বাংলাদেশের এতটুকু স্বার্থ আমার জীবন থাকতে কারও হাতে তুলে দেবো না, এটাই ছিল আমার প্রতিজ্ঞা। ’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতা চেয়েছিলেন বাংলাদেশ হবে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ। তিনি দেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ করতে চেয়েছিলেন। দুর্ভাগ্য তিনি সেটা পারেননি। আমরা সেটা করছি। ’
তিনি বলেন, ‘চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলাম, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করবো। আমি কৃতজ্ঞতা জানাই বাংলাদেশের জনগণের প্রতি, ধন্যবাদ জানাই দেশের মানুষকে। তারাই আমাকে সাহস দিয়েছেন, শক্তি দিয়েছেন; আর আল্লাহ রাব্বুল আলামিন। আমরা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করেছি। আজকে তিনটা আন্তর্জাতিক মানের বিমানবন্দর করেছি, চতুর্থটা হচ্ছে কক্সবাজারে। ’
নিজ বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমরা যুদ্ধ চাই না। স্যাংশন চাই না। এগুলো বন্ধ করুন। সব দেশ স্বাধীন, তারা তাদের মতো চলতে পারবে, সে অধিকার তাদের আছে। যুদ্ধের ভয়াবহতা আমরা জানি। ’
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় সাদা পায়রা উড়িয়ে এই সম্মেলনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।