দেশের পরিস্থিতি বেশ কয়েকদিন ধরেই উত্তপ্ত। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘উসকানিমূলক বক্তব্য’ নিয়ে ছাত্র-জনতার প্রতিবাদ চলছে। গত ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানী ঢাকার ধানমন্ডির ৩২ নম্বরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের নেতাদের বাড়িতে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এই পরিস্থিতির মধ্যে শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে গাজীপুরে সাবেক মন্ত্রী ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে ছাত্রদের ওপর মাইকে ঘোষণা দিয়ে হামলা চালানো হয়। এতে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন, যার মধ্যে কিছুজনের অবস্থা গুরুতর।
এদিকে, গাজীপুরে সাবেক মন্ত্রীর বাসভবনে হামলার ঘটনায় জানা যায়, হামলার আগে স্থানীয় ছাত্র-জনতা সাবেক মন্ত্রীর বাড়িতে আটকাপড়াদের মুক্তির জন্য আসার নির্দেশনা পায়। তবে এটি ছিল একটি ফাঁদ। স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সদস্যরা ওই ছাত্রদের ওপর হামলা চালাতে এই সুযোগ তৈরি করেছিল।
স্থানীয় সূত্র অনুযায়ী, ছাত্রলীগের কিছু সদস্য গাজীপুরের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতাদের ফোন করে জানান, সাবেক মন্ত্রী মোজাম্মেল হকের বাড়িতে কয়েকজন ছাত্র আটকে রাখা হয়েছে। তাদের মুক্তির জন্য ছাত্রদের সেখানে যেতে বলা হয়। এর ফলে ছাত্ররা সেখানে গিয়ে হামলার শিকার হয়। এই ঘটনার মূল প্রেরণা ছিলেন গাজীপুরের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম, যিনি এ ঘটনার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি বক্তব্যেও তার হুমকির ইঙ্গিত পাওয়া গেছে, যেখানে তিনি আওয়ামী লীগের নেতাদের ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য উসকানি দেন।
জাহাঙ্গীর আলম এবং সাবেক মন্ত্রী মোজাম্মেল হককে হামলার জন্য দায়ী করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি। তাদের অভিযোগ, হামলার ঘটনার সময় পুলিশ দেরিতে পৌঁছায়, ফলে ছাত্ররা আরো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আহত ছাত্ররা জানিয়েছেন, পুলিশ দ্রুত আসলে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হতো না।
এই ঘটনার পর গাজীপুরের রাজবাড়ীতে বিক্ষোভ সমাবেশের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, যেখানে তারা দাবি করেছেন যে এই হামলার পেছনে সরকারের মদত রয়েছে।