বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা তথা প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট বাংলাদেশে মাদক, জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদের কোনো স্থান নেই বলে জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন।তিনি বলেন, কোনো পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মাদক সেবনের প্রমাণ মিললে তার চাকরি যাবে।
কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ৪৮৮ জন পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যকে ‘আইজিপি’স এক্সেমপ্ল্যারি গুড সার্ভিসেস ব্যাজ (আইজি’স ব্যাজ) ও বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে বিজয়ী ইউনিটের পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
বুধবার পুলিশ সপ্তাহের দ্বিতীয় দিন রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সের প্যারেড গ্রাউন্ডে এ অনুষ্ঠানের অয়োজন করা হয়।
আইজিপি বলেন, আমাদের কোনো সদস্য মাদকের সঙ্গে জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়। সাধারণ মানুষের সঙ্গে মাদকের সংশ্লিষ্টতা থাকলে শুধু মামলা হয়। আর কোনো পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মাদক সেবনের প্রমাণ পেলে তার চাকরি যাবে। পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে মামলাও হবে।
পুলিশে নিয়োগের সময় আমরা ডোপ টেস্ট করি উল্লেখ করে তিনি বলেন, যারা মাদকাসক্ত তাদের সতর্ক করে দিচ্ছি, মাদকাসক্ত হলে কেউ চাকরি পাবে না।
মাদক ও দুর্নীতি সমাজের নীরব ঘাতক। মাদকবিরোধী অভিযানে পুলিশ জয়ী হবে। জঙ্গি-সন্ত্রাস যেভাবে নিয়ন্ত্রণে এসেছে, সেভাবে মাদক নিয়ন্ত্রণেও সফল হবে পুলিশ। জঙ্গি-মাদক ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের শূন্য সহিষ্ণুতা নীতি রয়েছে। যে কোনো ঘটনা ঘটলে দ্রুততম সময়ে আমরা অপরাধীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসছি।
আইজিপি বলেন, পুলিশকে জনবান্ধব বাহিনী হিসাবে গড়ে তুলতে আমরা কাজ করছি। থানাকে প্রতিটি মানুষের আস্থা ও ভরসার কেন্দ্র হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। যাতে সবাই নির্ভয়ে থানায় আসতে পারেন, সেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বেশিরভাগ থানাতেই সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে, যা রেঞ্জ ডিআইজি অফিস থেকে মনিটরিং করা হচ্ছে।
পুলিশের নিয়োগ ও পদোন্নতিতে স্বচ্ছতা সর্বক্ষেত্রে প্রশংসিত হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা নিয়োগ প্রক্রিয়ার অধিকাংশ কাজ স্মার্ট পদ্ধতিতে সম্পন্ন করছি। ঘরে বসে আবেদন করা যাচ্ছে। কোথায় পরীক্ষা সেটা জানা যাচ্ছে। ফলও ঘরে বসে পাওয়া যাচ্ছে। এর মধ্যে কোনো দালাল বা ফড়িয়া নেই।
পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনাদের প্রযুক্তিনির্ভর, গণমুখী, সেবামুখী এবং নারী-শিশুবান্ধব হতে হবে। নাগরিকরা যাতে সহজে, নির্ভয়ে থানায় যেতে পারেন, সমস্যার কথা বলতে পারেন এবং সেবা গ্রহণ করতে পারেন- সে ব্যাপারে সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। যারা একেবারে সাধারণ মানুষ, খেটে খাওয়া মানুষ, নিরীহ, নির্যাতিত, গরিব, নারী তাদের জন্য থানাকে আমি বিচার পাওয়ার স্থান হিসাবে দেখতে চাই। এ জন্য আমার প্রধান ও প্রথম কাজ হবে ভালো ব্যবহার ও জনগণের কথা শোনা এবং অতি দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা। এর ব্যত্যয় গ্রহণযোগ্য হবে না।
শিল্ড প্যারেড প্রতিযোগিতায় এপিবিএন সেরা : পুলিশ সপ্তাহের দ্বিতীয় দিন বুধবার রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স প্যারেড গ্রাউন্ডে শিল্ড প্যারেড প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এবারের প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করেছে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) দল। দ্বিতীয় হয়েছে যৌথ মেট্রো দল। তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ। বিজয়ী ইউনিটকে ট্রফি ও শিল্ড পুরস্কার প্রদান করেন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। এ সময় বার্ষিক পুলিশ সপ্তাহ কুচকাওয়াজ ও শিল্ড প্যারেডে বিজয়ী দলকে অভিনন্দন জানান আইজিপি।
‘স্মার্ট পুলিশ, স্মার্ট দেশ; শান্তি প্রগতির বাংলাদেশ’ এই প্রতিপাদ্যে এবার পুলিশ সপ্তাহ-২০২৪ উদযাপিত হচ্ছে। ৩ মার্চ শেষ হবে এই আয়োজন।