ঝালকাঠির নলছিটি থানার এসআই শহিদুল আলমের বিরুদ্ধে মামলার তদন্তের সময় ঘুষ দাবির ঘটনার তাকে রাজাপুর থানায় বদলি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে পুলিশ সুপার উজ্জ্বল কুমার রায় বদলির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে মামলা তদন্তে ঘুষ দাবির ঘটনায় গত রোববার দুপুরে এসআই শহিদুল আলমের বিরুদ্ধে বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজির কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন নলছিটি উপজেলার জুরকাঠি গ্রামের বাসিন্দা মাইনউদ্দিন খান। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার হলে তোলপাড় শুরু হয়।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, নলছিটি থানায় দীর্ঘ প্রায় সাড়ে ৩ বছর কর্মরত ছিলেন এসআই শহিদুল আলম। স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা সাইফুল ইসলাম আকনের দায়েরকৃত শত্রুতামূলক একটি মিথ্যা মামলার তিনি তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) হিসাবে নিযুক্ত হয়ে মাইনউদ্দিন খান ও তার পরিবারকে বিভিন্নভাবে হয়রানি ও নির্যাতন করেছেন। এসআই শহিদুল আলম ওই আওয়ামী লীগ নেতার কাছ থেকে মোটা অংকের ঘুষ নিয়ে বরিশাল সাইবার আদালতের ওই মামলায় মাইনউদ্দিন খানের নামে মিথ্যা মনগড়া কাল্পনিক তদন্ত প্রতিবেদন দেন।
প্রতিবেদন দাখিলের আগে এসআই শহিদুল আলম ওই মামলা থেকে মাইনউদ্দিন খানকে অব্যাহতি দেয়ার কথা বলে গত ২০২৩ সালের ২০ আগস্ট ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করে। ওই ঘুষের টাকা দিতে মাইনউদ্দিন খাম রাজি না হলে তার ব্যবহৃত মোবাইল (ডিভাইস) জব্দ এবং কোন রিকভারি ছাড়া ফরেনসিক রিপোর্ট অনুসরণ না করে মাইনউদ্দিন খানের নামে মিথ্যা ও মনগড়া তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন। যার প্রেক্ষিতে মাইনউদ্দিন খান ১০ দিন জেলহাজতে থাকেন।
এ ছাড়াও গত ৪ ফেব্রুয়ারি রাত ১২টা ১০ মিনিটে তার ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বর থেকে খান মাইনউদ্দিনের ছোটভাই গিয়াস উদ্দিন খানের মোবাইলে ফোন করে মিথ্যা মামলা দিয়ে মাইনউদ্দিন খানকে আবারও জেল খাটানোসহ নানা রকম হুমকি-ধমকি দিয়ে ভয়ভীতির কল রেকর্ড প্রতিবেদকের হাতে এসেছে।
অভিযোগীকারী মাইনউদ্দিন খান বলেন, ‘এসআই শহিদুল আলম একই থানায় দীর্ঘদিন যাবৎ চাকুরি করার সুবাদে এলাকার নিরীহ জনগণকে হয়রানি, হুমকি-ধমকি, ভয়ভীতি দেখিয়ে অবৈধভাবে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। বর্তমানে আমি ও আমার পরিবার আতঙ্কিত হয়ে জীবনযাপন করছি। এ কারণে তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছি।’
এলাকাবাসীর অভিযোগ, ‘নলছিটি থানায় কর্মরত থাকাকালীন সময় স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতাদের যোগসাজশে সাধারণ মানুষদের মামলার ভয় দেখিয়ে বিভিন্নভাবে হয়রানি ও টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিতেন এসআই শহিদুল আলম।’
অভিযোগের বিষয় এসআই শহিদুল আলম বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যা অভিযোগ সবই মিথ্যা। আমি ফরেনসিক রিপোর্ট অনুযায়ী তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছি। আর খান মাইনউদ্দিন খানের ভাই গিয়াসকে ফোন করে হুমকি দেওয়ার ঘটনা সত্য নয়।’
নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম জানান, ‘এআআই শহিদুল আলমের বদলির আদেশ পেয়েছি। তার হাতে কিছু কাজ রয়েছে সেগুলো শেষ হলে তিনি রাজাপুর থানায় যোগদান করবেন।’