ছাত্র অধিকার পরিষদের দুই নেতাকে মারধরের ঘটনায় জড়িত ছাত্রলীগ কর্মীরা প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। গত শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মেফতাহুল মারুফকে শাহবাগ থানা থেকে ছাড়িয়ে আনাকে কেন্দ্র করে ওই দুই নেতাকে মারধর করে ছাত্রলীগ কর্মীরা।
আজ সোমবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (ডুজা) কার্যালয়ে এসে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চান তারা। এসময় জড়িত ছাত্রলীগ কর্মীরা ছাড়াও ছাত্র অধিকার পরিষদ এবং মানবাধিকার বিষয়ক শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম ‘স্টুডেন্টস অ্যাগেইনস্ট টর্চার’ (স্যাট) সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
ওই ঘটনায় আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী তানজিল তুষার, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের হেদায়েত উল্লাহ, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ইত্তেজা হোসেন রাকিব, পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগের আব্দুল্লাহ আল মাসুরুর রুদ্র, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সুমন আলী ও এফ রহমান হল ছাত্রলীগ কর্মী রোকনুজ্জামান রোকনের জাড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। আজ তারা আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চান।
সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রলীগ কর্মীরা বলেন, আমাদের এক বন্ধুকে মারধর করা হচ্ছে এমন মিস ইনফরমেশন পেয়ে আমরা সেখানে যাই এবং অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে উনাদের আঘাত করে বসি। আমরা ইচ্ছেকৃতভাবে এমনটা করিনি। এর দায় সম্পূর্ণ আমাদের, ছাত্রলীগের নয়। ছাত্রলীগ থেকে আমাদের আদেশ করা হয়নি, আমরা ব্যক্তি উদ্যোগে এখানে এসেছি।
গত বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মেফতাহুল মারুফকে ‘রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড ও জঙ্গিবাদ সম্পৃক্ততা’ এর অভিযোগে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করেন মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন। অভিযোগের নিরিখে তথ্য-প্রমাণ না পাওয়ায় পুলিশ ওই শিক্ষার্থীকে পরের দিন শুক্রবার দুপুর ১টার দিকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়।
থানা থেকে বের হবার সময় মেফতাহুল মারুফকে নিয়ে ছাত্র অধিকার পরিষদ নেতাকর্মীদের সাথে তার (মারুফ) বন্ধুদের ধস্তাধস্তি হয়। এরই সূত্রে ছাত্র অধিকার পরিষদের দুই নেতাকে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধির সামনের ফুটপাতে অতর্কিত হামলা করে বসেন অভিযুক্ত ওই ছয় ছাত্রলীগ কর্মী। হামলায় ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাবি শাখার দপ্তর সম্পাদক সালেহ উদ্দিন সিফাত, অর্থ সম্পাদক আহনাফ সাঈদ খান গুরুতর আহত হন।
স্টুডেন্টস অ্যাগেইনস্ট টর্চার (স্যাট) এর প্রতিনিধি আনাস ইবনে মুনির বলেন, আমাদের হেড অব ডিরেক্টরস সালেহ উদ্দিন সিফাত ও ডকুমেন্টেশন ডিরেক্টর আহনাফ সাঈদ খানের ওপর তারা অতর্কিত হামলা চালায়। এ ঘটনায় দুইজনই ঢাকা মেডিকেল চিকিৎসা নিয়েছেন। আমরা এ ঘটনায় মামলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কিন্তু অভিযুক্তরা তাদের দোষ স্বীকার করেছে এবং ভবিষ্যতে এমন কিছু না করার কথা দেওয়ায় আমরা মামলা করা থেকে বিরত থাকছি।