খুলনায় নিখোঁজ রহিমা খাতুনের (৫৫) লাশ পেয়েছেন জানিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেছেন তার মেয়ে মরিয়ম মান্নান। বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১২টার দিকে তিনি ফেসবুক লিখেছেন, ‘আমার মায়ের লাশ পেয়েছি এইমাত্র।’
রাত ১২টা ৪ মিনিটে আরেক ফেসবুক পোস্টে মরিয়ম মান্নান লিখেছেন, ‘আমি আমার মাকে পেয়ে গেছি। আর কারও কাছে যাবো না। কাউকে আর বলবো না আমার মা কোথায়। কাউকে বলবো না আমাকে একটু সহযোগিতা করুন। কাউকে বলবো না আমার মাকে একটু খুঁজে দেবেন। কাউকে আর বিরক্ত করবো না। আমি আমার মাকে পেয়ে গেছি।’ এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার কল দিলেও ধরেননি মরিয়ম। তার মুঠোফোনে বার্তা পাঠালেও মেলেনি উত্তর।
ময়মনসিংহের ফুলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘১০ সেপ্টেম্বর সকালে থানার বহরদার বাজার থেকে অজ্ঞাত এক নারীর বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। ওই নারীর বয়স ৩০ কিংবা ৩২ হবে। দাবিদার না থাকায় দুদিন পর ১২ সেপ্টেম্বর অজ্ঞাত হিসেবে লাশটি দাফন করা হয়েছে। তবে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। ডিএনএ টেস্ট করতে প্রয়োজনীয় আলামতও সংরক্ষণ করেছি আমরা।’
ওসি আরও বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে আমাকে কল করেছেন মরিয়ম। তখন উদ্ধারকৃত নারীর পোশাক ও আলামত সম্পর্কে জানতে চান। পোশাক ও উদ্ধারকৃত আলামতের কথা শুনে নিজের মায়ের লাশ বলে দাবি করেন। এ অবস্থায় আমি তাকে বলেছি, শুক্রবার সকালে থানায় এসে উদ্ধারকৃত লাশের সঙ্গে পাওয়া আলামত ও পোশাকগুলো দেখে তারপরই যেন লাশ শনাক্ত করে। চূড়ান্তভাবে লাশ শনাক্তে আমরা মরিয়মের ডিএনএ টেস্ট করাতে পারি। তবে লাশ শনাক্তের আগে তার ফেসবুক পোস্ট দেয়া ঠিক হয়নি।’
পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘গত ১০ সেপ্টেম্বর ফুলপুর থানা এলাকা থেকে বস্তাবন্দি এক নারীর লাশ উদ্ধার হয়। ওই থানার ওসি আমাদের জানিয়েছেন, বয়স ৩২ উল্লেখ করে ওই নারীর লাশ দাফন করা হয়েছে। তবে তার ডিএনএ নমুনা সংরক্ষণ করেছে পুলিশ। আমরা নিশ্চিত নই যে ফুলপুরে যে নারীর লাশ পাওয়া গেছে তা মরিয়মের মায়ের। কারণ মরিয়মের মা রহিমা খাতুনের বয়স ৫৫ বছর। যদি তার মেয়ে পোশাক দেখে লাশ শনাক্ত করেও থাকেন এরপরও ডিএনএ টেস্ট করে প্রকৃতভাবে লাশ শনাক্ত করতে হবে। কারণ মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইকে দায়িত্ব দিয়েছেন আদালত।’
উল্লেখ্য, ২৭ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে পানি আনতে বাসা থেকে নিচে নামেন রহিমা খাতুন। ঘণ্টা পার হলেও তিনি বাসায় ফেরেননি। পরে মায়ের খোঁজে সন্তানরা নিচে নেমে ব্যবহৃত স্যান্ডেল, ওড়না ও কলস রাস্তার ওপর পড়ে থাকতে দেখেন। রাতে সম্ভাব্য সব স্থানে খুঁজে না পেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। পরে কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে দৌলতপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় ছয় জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ১৪ সেপ্টেম্বর মামলাটি পিবিআইতে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। এরপর প্রক্রিয়া মেনে ১৭ সেপ্টেম্বর নথিপত্র বুঝে নেয় পিবিআই। এখন এই মামলা তদন্ত করছেন পিবিআইয়ের পরিদর্শক আব্দুল মান্নান।