স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, বাংলাদেশ কখনো যুদ্ধ চায় না। আমরা শান্তিপ্রিয় জাতি, আমরা কোনো যুদ্ধ চাই না।
রবিবার(১৮ সেপ্টেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব বলেন।
সীমান্তে মিয়ানমারের গোলাবর্ষণ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এর ভেতরের কাহিনিগুলো আপনাদের লক্ষ্য করতে হবে। তারা এগুলো যে করছে, তার ভেতরে একটা কাহিনি আছে। আপনারা লক্ষ্য করুন, তাদের সীমানা পেরিয়ে আমাদের সীমানায় তাদের গোলাবারুদ আসছে।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, আমাদের এখানে আশ্রিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী যারা একদম জিরো লাইনে অবস্থান করছিল, ওই এলাকার ক্যাম্পের ভেতরে যে গোলাবারুদগুলো এসে পড়ে এর মধ্যে দুটি বিস্ফোরিত হয়েছে। এতে একজন নিহত ও কয়েকজন আহত হয়েছেন।
আমাদের বিজিবি কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে বিজিপিকে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এখানেই আমরা ক্ষান্ত নই, আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকেও তাদের কড়া প্রতিবাদ দেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রদূতকে তলব করে আমাদের আপত্তির কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রীও এ বিষয়ে ওয়াকিবহাল আছেন। আমরা মনে করি, এভাবে যদি এটা চলতেই থাকে তাহলে জাতিসংঘে গিয়ে বিষয়টি তুলব, আমাদের মানুষদের ওপর খামাখা গোলাবারুদ পড়ছে, যেখানে আমাদের কোনো ভূমিকা নেই।
তিনি বলেন, আমরা আমাদের কাজ করছি। তারা যদি না মানে, তাহলে দ্বিতীয় ধাপে সেখানে যাব। আমরা শান্তিপূর্ণ সমাধান চাই। আমাদের পরবর্তী পদক্ষেপের কথা যদি না শুনে, তাহলে আমরা সেখানে যাব।
এ সময় জানতে চাওয়া হয়– মিয়ানমার কোনো একটা কারণে করছে আপনি বললেন, কারণটা আসলে কি- এর জবাবে তিনি বলেন, সীমান্তে বিভিন্ন বিদ্রোহীদের সঙ্গে তাদের যুদ্ধ লেগেই আছে। এসব কারণে এটা হতে পারে। কেন হচ্ছে আমরা জানি না। আমরা জানি, আমাদের সীমান্তে এসে পড়ছে। কেন হচ্ছে, এটা তারা জানে।
মন্ত্রী বলেন, ফ্ল্যাগ মিটিংয়ে হয়তো তারা এটা বলবে। ব্যাখ্যা যদি তাদের থাকে তারা সেগুলো জানাবে। আমরা যেখানে কনসার্ন, আমাদের এলাকায় তাদের গোলাবারুদ পড়ছে, এটার জন্য আমরা প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
বিষয়টি কখন জাতিসংঘকে জানাবেন- এ প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটা প্রধানমন্ত্রী সিদ্ধান্ত নেবেন।
আরেক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার থেকে আর একজন রোহিঙ্গাকেও বাংলাদেশে ঢুকতে দেওয়া হবে না। বর্ডারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও যথেষ্ট মনোবল নিয়ে দায়িত্ব পালন করছে।
গত শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্তের ওপারে গোলাগুলি চলে। ওই ঘটনায় রাখাইন রাজ্যের পাহাড় থেকে ছোড়া একটি মর্টার শেল এসে তুমব্রু সীমান্তের বিপরীতে শূন্যরেখায় পড়লে এক রোহিঙ্গা কিশোরের মৃত্যু হয়। এ সময় এক শিশুসহ পাঁচ রোহিঙ্গা আহত হয়েছেন। তারা এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।