আবদুল্লাহ আল আমিন, দেবিদ্বার প্রতিনিধি: কুমিল্লার দেবিদ্বারে শ্বশুরবাড়ি থেকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে এক ব্যবসায়ীকে ছুরিকাঘাতে খুন করেছে দুর্বৃত্তরা। জানা যায়, ব্যবসায়ীকে আটকে রেখে দুর্বৃত্তরা ১০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। এ দাবি না মানায় তাকে ছুরি আঘাতে খুন করেছে দুর্বৃত্তরা।
নিহত ওই ব্যক্তির নাম মুছা আলী(৪০)। তিনি কক্সবাজার জেলার টেকনাফ উপজেলার নাজিরপাড়া গ্রামের মৃত: মাজেদ আলীর একমাত্র পুত্র। তিনি কক্সবাজারের টেকনাফ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কাপড় এবং জুতার ব্যবসা করতেন।
গতকাল বুধবার (৩১ জানুয়ারি) দিবাগত রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন দেবিদ্বার উপজেলার বাগুর বাস স্টেশনের উত্তর পাশের এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
বৃহস্পতিবার (১ফেব্রুয়ারি) সকালে নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
মুছা আলী ২০১৭ সালে পারিবারিক ভাবে দেবিদ্বার উপজেলার ১৪ নং সুলতানপুর ইউনিয়নের তুলাগাও গ্রামের গ্রাম পুলিশ সুরুজ মিয়ার কন্যা রাজিয়া সুলানা(৩৫)’র সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বর্তমানে তাদের ঘরে মো. সালমান নামে ৩ বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে।
নিহত মুসার স্ত্রী রাজিয়া বেগম বলেন, আমার স্বামী টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কাপড় ও কসমেটিক ব্যবসা করত। গত মঙ্গলবার তিনি ঢাকায় গিয়ে দোকানের জন্য কাপড় ও কসমেটিক কিনতে আসেন। টাকার সমস্যা হওয়াতে মাল রেখেই আমাদের বাড়িতে আসেন। বৃহস্পতিবার মাল নিয়ে টেকনাফ যাওয়ার কথা থাকলেও। বুধবার দিবাগত-রাত ৭টার সময় বাগুর এলাকার সোহেল নামে ব্যক্তি ইমুতে ফোন করে তার সাথে দেখা করার জন্য ডাকে।
তিনি বলেন, সেখানে যাওয়ার পর আমার স্বামীকে আটক করে তার নিজ মোবাইলে আমাকে ফোন করে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে দুর্বৃত্তরা। যদি টাকা না দেওয়া হয়, তাহলে মেরে লাশ সড়কে ফেলে দেওয়া হবে বলে হুমকি প্রদান করে। আমি কোন উপায় না পেয়ে ত্রিশ হাজার টাকা দিতে রাজি হই। তারপর সেই টাকা একটি বিকাশ নাম্বারে ফোনে কথা বলা ওই ব্যক্তির কাছে পাঠাই।
টাকা পাঠানোর আনুমানিক এক ঘন্টা পর বাগুর থেকে তার স্বামীর মোবাইল দিয়ে কেউ একজন ভিডিও কলে জানান, তার স্বামী বাগুর মেডিনোভা হসপিটালে আছে। সেখানে গিয়ে দেখেন তার স্বামীর মৃত দেহ পড়ে আছে। তার হাত, পা ও ঘাড়ে ছুরির আঘাত ছিল।
এ বিষয়ে দেবিদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ মো. নয়ন মিয়া জানান, সংবাদ পেয়ে গতকাল রাত রাত ১১টায় নিহতের মরদেহ উদ্ধার করি এবং আজ সকালে লাশ মর্গে পাঠিয়েছি। নিহতের পরিবার আসলে মামলা দায়ের হবে।
তিনি আরও জানান, নিহত মুছা আলী একাধিক মাদক মামলার আসামি। হত্যাকান্ডে জড়িতরা নিহত মুছার পূর্বপরিচিত ছিল। মাদকের কারবার সম্পৃক্ত বিরোধ এবং টাকা লেনদেনের ঘটনায় এ হত্যার ঘটনা ঘটতে পারে। তবে তদন্তের পরই বিস্তারিত বলা যাবে।