কুমিল্লার মুরাদনগরে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে এক নারীকে (২৫) ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় শুক্রবার দুপুরে মুরাদনগর থানায় মামলা করেছেন ওই নারী। পরে মামলার মূল আসামি ফজর আলীকে রাজধানীর সায়েদাবাদ থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ঘটনার একটি ভিডিও ফুটেজ ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। চলতে থাকে আলোচনা-সমালোচনা। ডিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে আরও ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
রোববার (২৯ জুন) সকালে বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার। গ্রেপ্তার অন্যরা হলেন—সুমন, রমজান, মো. আরিফ ও মো. অনিক।
মামলার এজাহার ও ভুক্তভোগী ওই নারীর ভাষ্য অনুযায়ী, প্রায় ১৫ দিন আগে স্বামীর বাড়ি থেকে বাবার বাড়িতে সন্তানদের নিয়ে বেড়াতে আসেন তিনি। বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক ১০টার দিকে ফজর আলী (৩৬) নামের এক ব্যক্তি তার বাবার বাড়ি গিয়ে ঘরের দরজা খুলতে বলেন। এ সময় তিনি দরজা খুলতে অস্বীকৃতি জানান। একপর্যায়ে ওই ব্যক্তি ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে তাকে ধর্ষণ করেন।
ছুরি দেখিয়ে ২৫ বছর বয়সী ওই নারীকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ ওঠে। বৃহস্পতিবার রাতে পরিবারের অন্য সদস্যরা মেলায় গেলে, প্রতিবেশী ফজর আলী বাড়িতে ঢোকেন। ওই প্রতিবেশী তাকে ছুরি দেখিয়ে ধর্ষণ করেন এবং ঘটনা প্রকাশ করলে হত্যার হুমকি দেন।
তিনি চিৎকার করলে স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন এবং তারা ফজর আলীকে মারধর করেন।
পরবর্তীতে আহত ফজর আলী সেখান থেকে পালিয়ে যান। তবে ঘটনাস্থলে উপস্থিত কিছু মানুষ তাৎক্ষণিকভাবে ওই নারীর ভিডিও ধারণ করেন এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন।
ওই নারী বলেন, টাকা ধার নেওয়া নিয়ে ফজর আলীর সঙ্গে তাদের পরিবারের পরিচয় ঘটে। এ সূত্র ধরেই ফজর আলী বাড়িতে প্রবেশ করে।
ভুক্তভোগী নারীর পাশের বাড়ির এক সদস্য বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাতে ওই বাড়িতে অনেক শব্দ হচ্ছিল। আমি ভয়ে দৌড়ে গিয়ে লোকজন ডেকে নিয়ে আসি। লোকজন গিয়ে দেখেন দরজা ভাঙা। পরে আমরা ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করি।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ঘটনার সময় ফজর আলীকে লোকজন আটক করে মারধর করেন। পরে তাকে কুমিল্লা শহরের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই হাসপাতাল থেকে ফজর আলী পালিয়ে যান। পরে আজ তাকে ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
মুরাদনগর থানার ওসি জাহিদুর রহমান বলেন, ফজর আলীকে আসামি করে মামলা হয়েছে। বাদির স্বাস্থ্য পরীক্ষাও শেষ।
এর পরই নারীকে ধর্ষণের ঘটনার ভিডিও ভাইরাল করা ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রোববার (২৯ জুন) রাত দেড়টার দিকে কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার নাজির আহমেদ খান স্বাক্ষরিত সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। পরে আরও একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
কুমিল্লা পুলিশের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৬ জুন রাতে মুরাদনগরের রামচন্দ্রপুর পাঁচকিত্তা গ্রামের ফজর আলী একজন প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণ করার অভিযোগে এলাকার লোকজনের হাতে আটক ও প্রহৃত হন। পরবর্তী সময়ে আহত ফজর আলী সেখান থেকে পালিয়ে যান। ঘটনাস্থলে উপস্থিত কিছু লোক তাৎক্ষণিকভাবে ভিকটিমের ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়।