ভয়াবহ ভূমিকম্পে মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে মিয়ানমার। শুক্রবারের এই প্রলয়ঙ্করী কম্পনে নিহতের সংখ্যা এক হাজার ছাড়িয়েছে, আহত হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। শুধু মিয়ানমারই নয়, কম্পনের প্রভাব পড়েছে থাইল্যান্ডসহ আশপাশের দেশগুলোতেও।
ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলের সবচেয়ে কাছের শহর মান্দালয়ে প্রাণহানির সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। ধ্বংসস্তূপে আটকা পড়েছেন বহু মানুষ। উদ্ধারকর্মীরা দিনরাত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন জীবিতদের বের করে আনতে, কিন্তু অনেকের ভাগ্যে কী ঘটেছে, তা এখনো অজানা।
মান্দালয়ে উদ্ধারকাজে অংশ নেওয়া এক স্বেচ্ছাসেবী বিবিসিকে জানিয়েছেন, তাঁরা খালি হাতেই ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে মানুষকে উদ্ধারের চেষ্টা করছেন। প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের অভাবের কারণে উদ্ধার তৎপরতা ব্যাহত হচ্ছে।
এদিকে, থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে ভূমিকম্পের প্রভাবে একটি নির্মাণাধীন হাইরাইজ ভবন ধসে পড়েছে। সেখানে প্রায় ১০০ শ্রমিক আটকা পড়েছেন, যাদের এখনো সন্ধান মেলেনি। ধ্বংসস্তূপের নিচে অন্তত ৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
পরিস্থিতির ভয়াবহতায় আন্তর্জাতিক সহায়তার জন্য আবেদন করেছে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সরকার। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার ফলে দেশটির অর্থনীতি বিপর্যস্ত, আর জান্তা সরকার আন্তর্জাতিক মহলে একঘরে হয়ে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে তাদের পক্ষ থেকে সাহায্যের আবেদন এক বিরল ঘটনা।
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর কঠোর নিয়ন্ত্রণ এবং অভ্যন্তরীণ নাগরিক সমাজের অক্ষমতার কারণে আসল ক্ষতির মাত্রা নির্ধারণ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তবে দেশজুড়ে চরম মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে। উদ্ধারকর্মীরা জীবন বাজি রেখে ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু পরিস্থিতি মোকাবিলায় জরুরি সহায়তা না মিললে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।