যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হামলায় ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর কতটা ক্ষতি হয়েছে, তা নিয়ে ইরান আনুষ্ঠানিকভাবে মুখ খুলেছে। দেশটির কর্তৃপক্ষ জানায়, ফোরদো পারমাণবিক স্থাপনাটি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তবে বড় ধরনের কোনো তেজস্ক্রিয় বিপদের আশঙ্কা নেই।
ইরানের আধা-সরকারি সংবাদ সংস্থা তাসনিম এক প্রতিবেদনে জানায়, কোম প্রদেশের এক সরকারি কর্মকর্তা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলায় ফোরদোর কিছু অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কোম প্রদেশের ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট হেডকোয়ার্টারের মুখপাত্র মোর্তেজা হায়দারি জানান, কয়েক ঘণ্টা আগে কোমে বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় করা হয় এবং শত্রু লক্ষ্যবস্তু শনাক্তের পর ফোরদোর একটি অংশে বিমান হামলা হয়।
অন্যদিকে, ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইরনা দেশটির রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার সংস্থার এক কর্মকর্তার বরাতে জানায়, মার্কিন হামলায় যেসব স্থাপনায় আঘাত হানা হয়েছে, সেগুলোর ভেতরে তখন কোনো তেজস্ক্রিয় পদার্থ ছিল না। কর্মকর্তার ভাষ্যমতে, ওইসব স্থাপনা থেকে আগে থেকেই সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম বা তেজস্ক্রিয় উপাদান সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এর আগে, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক পোস্টে দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি পারমাণবিক কেন্দ্র—ফোরদো, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহানে সফলভাবে হামলা চালিয়েছে। তিনি জানান, হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রের সব বিমান ইরানের আকাশসীমা থেকে নিরাপদে ফিরে গেছে।
ট্রাম্প একই সঙ্গে একটি ওপেন-সোর্স গোয়েন্দা তথ্যভিত্তিক পোস্ট শেয়ার করেন, যেখানে বলা হয়—ফোরদো স্থাপনাটি ‘আর নেই’।
তবে ইরানের পক্ষ থেকে ট্রাম্পের এই দাবির সঙ্গে পুরোপুরি একমত হওয়া হয়নি। দেশটি হামলার সত্যতা স্বীকার করলেও ক্ষয়ক্ষতি সীমিত এবং নিয়ন্ত্রিত বলে দাবি করছে।
উল্লেখ্য, ফোরদো হলো ইরানের সবচেয়ে নিরাপদ ও গোপন পারমাণবিক কেন্দ্রগুলোর একটি। কোম প্রদেশের একটি পাহাড়ের গভীরে স্থাপনাটি অবস্থিত। পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মতে, এটি ইসরায়েলের অন্যতম অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত লক্ষ্যবস্তু ছিল বহুদিন ধরেই।