ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি নৃশংসতায় এ পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছে ৩৪ হাজারের অধিক মানুষ। এতে দিনে দিনে মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বেড়েছে ইসরায়েল বিরোধী বিক্ষোভের প্রবণতা। তারা নিজ নিজ ক্যাম্পাসে তাঁবু টানিয়ে ফিলিস্তিনের নিপীড়িত জনতার পক্ষে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ জানাচ্ছে।
কিন্তু তাদের বিক্ষোভে বাধা দিচ্ছে পুলিশ। এ পর্যন্ত এই বিক্ষোভ থেকে গ্রেপ্তার হয়েছে ৫৫০ জনেরও বেশি শিক্ষার্থী।
শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, যেসব প্রতিষ্ঠান ইসরায়েলে বিনিয়োগ করছে এবং গাজা যুদ্ধে ইন্ধন দিচ্ছে তাদের কার্যক্রম যেন বন্ধ করা হয়।
বিক্ষোভকারীরা বলছেন, তারা গ্রেপ্তারের ঝুঁকি নিতে রাজি কিন্তু তাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন থামাবে না।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গত সপ্তাহে প্রায় ৫৫০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হার্ভার্ড, কলাম্বিয়া, ইয়েল, ইউসি বার্কলে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্যাম্পাসে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিক্ষোভগুলো প্রায়শই অনুমোদন ছাড়াই করা হচ্ছে এবং তা প্রতিরোধ করতে পুলিশ ডাকা হয়।
গত দুই দিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসকদের নির্দেশে আইন প্রয়োগকারীরা আটলান্টার এমরি ইউনিভার্সিটিতে ছাত্র বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে টেজার এবং টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করেছে।
কর্মীরা বলছেন, দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণে ব্যবহার করা সজ্জা পরিহিত এবং ঘোড়ার পিঠে চড়ে থাকা অফিসাররা টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ ভণ্ডুল করেছে।
এমরি ইউনিভার্সিটিতে একজন অধ্যাপককে মাটিতে ফেলার এবং হাতকড়া পরানোর একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায় পুলিশ একজন শিক্ষার্থীকে মাটিতে ফেলে ধস্তাধস্তি করছে। প্রফেসর ক্যারোলিন ফোহলিন তাতে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন।
বিক্ষোভকারীদের একটাই কথা, তারা গাজার ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে একাত্মতা জানায়। তারা চায় যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ইসরায়েলের সঙ্গে জড়িত সেগুলোতে এবং গাজা যুদ্ধে ইন্ধন জোগায় এমন অস্ত্রে তাদের বিনিয়োগ কমিয়ে আনুক।
এই সপ্তাহের শুরুর দিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছিলেন, স্পষ্ট ইহুদি বিরোধীতার কোনো ঠাঁই কলেজ ক্যাম্পাসে নেই।
তবে হোয়াইট হাউস বলেছে, রাষ্ট্রপতি মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে সমর্থন করেন।
বিক্ষোভকারীদের গ্রেপ্তারের নিন্দা করেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন। একইসাথে কর্তৃপক্ষকে শিক্ষার্থীদের বাক স্বাধীনতার অধিকারকে সম্মান করার আহ্বান জানিয়েছে।