স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, নতুন করে বাংলাদেশ সীমান্তের ভেতরে আর কাউকে ঢুকতে দেওয়া হবে না। যুদ্ধে কী ঘটবে আমরা এখন বলতে পারব না। আরাকান আর্মিরা কীভাবে এটা শেষ করতে এখনো আমরা প্রেডিক্ট করতে পারছি না।
বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ২৫টি দল মিয়ানমার সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে। আরাকান আর্মি অনেক সুসংগঠিত, আরাকান রাজ্যেই তারা বারবার নিজেদের অবস্থান জানান দিচ্ছে। তাদের কাছে ভারী অস্ত্র আছে এ রকম আমাদের কাছে মনে হচ্ছে।
আমরা আমাদের সীমান্তের ভেতরে আর কাউকে ঢুকতে দেবো না উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা মনে করি, যার যেটা জন্মভূমি, তারা সেখানেই থাকবে। অনেক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আমাদের দেশে আশ্রয় দিয়েছি। মিয়ানমার এবং বিশ্বের সব দেশকে আমরা বলছি, যত দ্রুত সম্ভব তাদের ফেরত নেওয়ার ব্যবস্থা জোরদার করার জন্য। সেই প্রচেষ্টা আমাদের অব্যাহত আছে।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, যে দৃশ্য আপনারা এখন দেখছেন, যুদ্ধে কী ঘটবে আমরা এখন বলতে পারব না। আরাকান আর্মিরা কীভাবে এটা শেষ করতে এখনো আমরা প্রেডিক্ট করতে পারছি না। আমরা যে ঝামেলায় রয়েছি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী নিয়ে; আমরা মনে করি, তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হবে, যুদ্ধ থামবে এবং তারা তাদের দেশে ফেরত যাবে। এটা আমরা আশা করছি।
বিএনপির প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এবার তো তারা নির্বাচনই করেননি। কাজেই বিরোধী দল বলে তারা দাবিও করতে পারেন না। তারা আরেকটি রাজনৈতিক দল; যেমন অন্যান্য দল আছে ছোট ছোট অনেক, সে রকম একটি দলের মতো আজকে বিএনপির অবস্থান।’
বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতারা একের পর এক ছাড়া পাচ্ছেন। অনেকে অভিযোগ করছেন, বিষয়টা কি এ রকম যে, এক তরফা নির্বাচন করার জন্য আওয়ামী লীগ তাদের জেলে পাঠিয়েছিল—একজন গণমাধ্যমকর্মী দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ‘এটা সঠিক নয়। বিভিন্ন কারণেই তারা অন্তরীণ হয়েছিলেন। ২৮ অক্টোবর এবং তার আগে প্রতিদিন তারা বাস পুড়িয়েছেন, মানুষ হত্যা করেছেন। আমি সব সময় বলেছি, তাদের নেতারা এসব কর্মকাণ্ডের দায় এড়াতে পারেন না।’
তিনি বলেন, ‘২৮ অক্টোবর সব বড় নেতারা ডায়েসে ছিলেন। তাদের সম্মুখে এসব ঘটনাগুলো ঘটেছে। প্রধান বিচারপতির বাসায় ভাঙচুর, জাজেস কমপ্লেক্স-হাসপাতাল ভাঙচুর, সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতন। আমাদের স্থাপিত ক্যামেরাগুলো পর্যন্ত ধ্বংস করে দিয়েছে। বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে ড্রোনে আমরা রিয়েল পিকচার ধারণ করতে পেরেছিলাম বলেই—সারা বাংলাদেশ থেকে এরা নেতাকর্মীদের নিয়ে এসেছিল এই ঘটনা ঘটানোর জন্য। ড্রোনে আমরা যাদের শনাক্ত করতে পেরেছি, তাদের আমরা অ্যারেস্ট করেছি।’
বিএনপি এখনো সরকার পতনের দাবিতে রাজপথে আছে সে প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তারা নিয়মতান্ত্রিকভাবে বিক্ষোভ করলে আমাদের তো সেখানে কিছু বলার নেই। তারা যদি ভাঙচুর করে, জানমালের ক্ষতি করে, চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করে, আইনের বাইরে কিছু ঘটিয়ে ফেলে, তখন আমাদের কিছু করণীয় আছে। আমাদের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবে। বিএনপি কী করবে এটি তাদের ওপর নির্ভর করে।’
বিএনপি বলছে তারা নির্বাচন মানে না—এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আগে থেকেই তো বলে আসছে। সারা বিশ্বের নেতারা এই নির্বাচন দেখে মনে করেছেন একটা সুন্দর নির্বাচন হয়েছে। এতই সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে, পুলিশের আইজি মহোদয়ের ভাইও ফেল করেছেন। আমাদের রানিং মন্ত্রীরা ফেল করেছেন। কাজেই একটা অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে। বাংলাদেশ কেন, পৃথিবীর সবাই এখন বলছেন, একটা সুন্দর নির্বাচন এখানে হয়েছে। কারা মানলো, না মানলো সেটার জন্য কিন্তু বসে থাকে না। সময় ও স্রোত কখনো থেমে থাকে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘এরা যদি মনে করে, নির্বাচন ঠিক হয়নি, আগামীতে আবার যখন নির্বাচন আসবে তখন এসে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে তারা ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এটাই আমরা মনে করি।’