ভারতের ওডিশার বালাসোরে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় শেষ খবর পর্যন্ত ২৬১ জন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হন প্রায় একহাজার। এ দুর্ঘটনা কেন ঘটেছিল
তা নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন ব্যাখ্যা পাওয়া যাচ্ছিল গণমাধ্যমের খবরে। এই প্রথম ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষের তদন্তের প্রতিবেদন এসেছে।
বালাসোরে ট্রেন দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে প্রাথমিক তদন্তে সংকেতে বিভ্রাটের তথ্য উঠে এসেছে। ভারতের রেল কর্তৃপক্ষের তদন্ত দলের প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, কলকাতা থেকে চেন্নাইগামী করমন্ডল এক্সপ্রেসকে মূল লাইন দিয়ে চলে যাওয়ার সংকেত দেওয়ার পর তা আবার তুলে নেওয়া হয়। ট্রেনটি তখন স্টেশন এলাকার বাড়তি লাইনে (লুপ লাইন) ঢুকে গিয়ে সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা একটি মালবাহী ট্রেনে আঘাত করে।
শুক্রবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে বালাসোরের বাহাঙ্গাবাজার স্টেশনের কাছে এই দুর্ঘটনায় এ দুই ট্রেনের সঙ্গে আরেকটি দ্রুতগতির ট্রেন হাওড়া এক্সপ্রেসও জড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় অন্তত ২৮৮ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে বেসরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
তবে ভারতের রেল কর্তৃপক্ষ বলেছে, নিহত ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৬১। আজ শনিবার উদ্ধার অভিযান শেষ করেছে কর্তৃপক্ষ। দুর্ঘটনায় প্রায় ১ হাজারের মত মানুষ আহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তির সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
রেল কর্তৃপক্ষের প্রাথমিক তদন্তে বলা হয়েছে, ১২৮৪১ নম্বর শালিমার–চেন্নাই সেন্ট্রাল করমন্ডল এক্সপ্রেসকে মূল লাইন দিয়ে চলে যাওয়ার সংকেত দেওয়া হয়। এরপরই আবার সংকেত তুলে নেওয়া হয়। কেন সংকেত দেওয়া হয়েছিল এবং তা তুলে নেওয়া হয়েছিল, তার কারণ স্পষ্ট নয়। সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস ট্রেনটি সংলগ্ন বাড়তি লাইনে (লুপ লাইন) ঢুকে পড়লে মালবাহী ট্রেনের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। তখন ট্রেনটির ২১টি বগি লাইনচ্যুত হয় ও কয়েকটি উল্টে পড়ে।
এর মধ্যে বিপরীত দিক থেকে ১২৮৬৪ নম্বর ট্রেনটি (যশবন্তপুর–হাওড়া এক্সপ্রেস) অপর মূল লাইন ধরে চলে আসে। এর দুটি বগি লাইনচ্যুত হয় ও উল্টে পড়ে।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করমন্ডল এক্সপ্রেসের গার্ড ব্রেক ভ্যান ও ফার্স্ট এসি কোচ সামনের দিকে যাওয়ার মূল লাইনের ওপর ছিল। আর ইঞ্জিন পাওয়া গেছে মালবাহী ট্রেনের ওপরে।
প্রাথমিক এই তদন্ত প্রতিবেদনের একটি অনুলিপি তাদের হাতে এসেছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য হিন্দু। ভারতের রেলওয়ে নিরাপত্তাবিষয়ক কমিশনারের তত্ত্বাবধানে এ ঘটনার বিস্তারিত তদন্ত হবে বলে রেলওয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানিয়েছেন।