ইরান-ইসরায়েলের মধ্যে চলা ১২ দিনের যুদ্ধ শেষে এখন যোগ-বিয়োগ হচ্ছে কার কতটুকু হলো ক্ষয়ক্ষতি। মৃত্যু আর রক্তের হিসেব কষা হচ্ছে। এরইমাঝে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বলেছেন, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সাম্প্রতিক সংঘর্ষে অনেকে প্রাণ হারিয়েছে ও রক্ত দিয়েছে, কিন্তু এক ইঞ্চি মাটি কিংবা ইরানের মর্যাদায় ছাড় দেয়া হয়নি।
ইরানীদের রক্ত ঝরিয়ে যেই যুদ্ধের শুরু করেছিল ইসরায়েল, সেই যুদ্ধের যেন ইতি টেনেছে ইরান। প্রতিশোধ নিতে মুহূর্তও দেরি করেনি আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। থেমে থাকেনি কোনো পরাশক্তির ভয়ে। মিসাইলের জবাব মুখের কথায় হয় না। সেটিই দেখিয়েছে ইরান। বিশ্ব অবাক হয়ে দেখেছে ইরানের অস্ত্রের সমৃদ্ধ ভাণ্ডার। যুদ্ধে ইসরায়েলকে সঙ্গ দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় করেছে হামলা। জবাবে পরদিনই কাতারে অবস্থিত মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা চালায় তেহরান। শেষে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুদ্ধ বিরতির ঘোষণা দিতে বাধ্য হন।
এই যুদ্ধ লিখে গেছে এক ইতিহাস। হার না মানার ইতিহাস। মাথা না নোয়ানোর ইতিহাস। বিশ্ব এক নেতাকে পেয়েছে, যার ভাষ্য বজ্রের মতো কঠোর– বলেছেন, ‘আত্মসমর্পণ শব্দটি আমাদের শব্দভাণ্ডারে নেই।’
শনিবার ১২ দিনের এই যুদ্ধে নিহতদের তেহরানে রাষ্ট্রীয় জানাজায় অংশ নেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি। তার ভাষ্য, ইরানের এই ক্ষয়ক্ষতি জাতীয় প্রতিরোধের প্রতীক হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
অকপটে বলে যান তিনি, ‘রক্ত দিয়েছি, কিন্তু মর্যাদার প্রশ্নে এক ইঞ্চিও ছাড় দেয়নি ইরানিরা; সন্তান হারিয়েছে, কিন্তু সম্মান হারায়নি ইরানিরা। তারা (ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র) হাজার হাজার টন বোমার নিচে দাঁড়িয়ে থেকেছে, কিন্তু আত্মসমর্পণ করেনি’।
আরাঘচি এও বলেন, ক্ষতিগ্রস্থ অবকাঠামো সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পুনর্নির্মাণ করা যাবে, কিন্তু একটি জাতির গর্ব যে কোনো কিছুর চেয়ে বেশি মূল্যবান। এই যুদ্ধ ইরানের দীর্ঘ ইতিহাসে ‘মুক্তার মতো জ্বলজ্বল করবে’ বলেই মনে করেন ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
দখলদার ইসরায়েলের বিরুদ্ধে এই যুদ্ধ বিশ্ববাসীর চোখে ইরান‘আরও শক্তিশালী ও মর্যাদাশীল’ হয়ে উঠেছে বলেই জানান তিনি। ইতিহাস বলে, পারস্য-ইরান কখনো মাথা নোয়ায় না কোনো শক্তির কাছে।