বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর আরোপিত পাল্টা শুল্ক ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ করায় রপ্তানিতে কোনো বিঘ্ন ঘটবে না। তার মতে, এই নতুন শুল্ক হারে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান ধরে রাখতে পারবে।
শুক্রবার (১ আগস্ট) সকালে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে বাণিজ্য উপদেষ্টার তাৎক্ষণিক এই প্রতিক্রিয়া তুলে ধরেন।
ফেসবুক পোস্টে শফিকুল আলম লেখেন, ‘বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের তৃতীয় দফার শুল্ক আলোচনা শেষ হওয়ার পর হোয়াইট হাউজ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, বাংলাদেশের ওপর ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এর আগে এই হার ছিল ৩৭ শতাংশ, যা পরে কমিয়ে ৩৫ শতাংশ করা হয়। চূড়ান্ত আলোচনা শেষে এই হার ২০ শতাংশে নামিয়ে আনা হলো।’
পোস্টে আরও বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে শুল্ক আলোচনায় নেতৃত্ব দেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
তার মন্তব্য অনুযায়ী, ‘বাংলাদেশের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করায় আমরা এখনো প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা ধরে রাখতে পারব। রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কা নেই। তবে আমরা আশা করেছিলাম এই হার ২০ শতাংশের নিচে নামানো হবে।’
এদিকে, হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে শুক্রবার দেওয়া এক ঘোষণায় জানানো হয়, আজ ১ আগস্ট থেকে নতুন শুল্ক কার্যকর হচ্ছে। ঘোষণায় উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।এই ঘোষণায় আরও জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্র একইসঙ্গে একাধিক দেশের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছে।
এর মধ্যে ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ, পাকিস্তান, ভিয়েতনাম, শ্রীলঙ্কা ও ফিলিপাইনের ওপর ২০ শতাংশ, কম্বোডিয়া, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার ওপর ১৯ শতাংশ, আফগানিস্তানের ওপর ১৫ শতাংশ এবং মিয়ানমারের ওপর সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।
চলতি বছরের ২ এপ্রিল প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্ববাজারে মার্কিন বাণিজ্য ঘাটতির অজুহাতে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করেন। সেই সময় বাংলাদেশের ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক নির্ধারণ করা হয়।
পরবর্তীতে ৯ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্র ৯০ দিনের জন্য ওই শুল্ক কার্যকর স্থগিত করে আলোচনার সুযোগ দেয়। ৯ জুলাই সেই সময়সীমা শেষ হওয়ার একদিন আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প একটি চিঠিতে বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে জানান, বাংলাদেশের ওপর শুল্ক হার ২ শতাংশ কমিয়ে ৩৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে ওই সময়ের পরও তা কার্যকর করা হয়নি।
পরিস্থিতি পুনরায় বিবেচনায় নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে শুল্ক নিয়ে চুক্তিতে পৌঁছাতে দেশগুলোকে সময় বেঁধে দিয়েছিল। সেই সময়সীমা শেষে ১ আগস্ট থেকে নতুন শুল্ক কার্যকর হলো।