ঢাবি প্রতিনিধি: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে রমজান উপলক্ষে অনুষ্ঠান আয়োজন প্রসঙ্গে দেশব্যাপী আলোচনা-সমালোচনার প্রেক্ষিতে এ বিষয়ে নিজস্ব ব্যাখ্যা প্রদান করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতরের পরিচালক মাহমুদ আলম সাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ ব্যাখ্যা জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি কয়েকটি পত্রিকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রমজানের অনুষ্ঠান আয়োজনে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে প্রকাশিত সংবাদের প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয়েছে যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রমজানের আলোচনা সম্পর্কিত অনুষ্ঠান আয়োজনে কর্তৃপক্ষ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এটি সম্পূর্ণরূপে একটি অসত্য, বিভ্রান্তিকর ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রতিবেদন। প্রকৃতপক্ষে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কখনও রমজানে শান্তিপূর্ণ ও ইতিবাচক অনুষ্ঠান আয়োজনে কোন নিষেধাজ্ঞা দেয়নি। বলাবাহুল্য, প্রতিদিনই ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে আসছে। কতিপয় রাজনৈতিক সংগঠনের অনুসারীরা পবিত্র রমজান মাসকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দু-একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটিয়েছে, যার ফলে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বিঘ্নিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ও শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে প্রক্টর অফিস থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছে। এই বিজ্ঞপ্তিতে রমজানের অনুষ্ঠান আয়োজনে ‘নিষেধাজ্ঞা’ শব্দটি কোথাও উল্লেখ নেই।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, পবিত্র রমজানকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে এরকম অসত্য ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রতিবেদন প্রকাশের মাধ্যমে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হয়েছে, যা কোনক্রমেই কাম্য নয়।
প্রসঙ্গত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রমজান উপলক্ষে শিক্ষার্থীদের বেশকিছু কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে আলোচনা-সমালোচনা চলাকালেই সর্বশেষ গত ১৩ মার্চ অনুষ্ঠিত ‘প্রোডাক্টিভ রমাদান’ শীর্ষক সেমিনারের আয়োজকদের ওপর হামলা হয়। এরপর এই ধরনের কোন অনুষ্ঠান আয়োজনের অনুমতি না দিতে গত ১৫মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোর প্রাধ্যক্ষ, অনুষদের ডিন, বিভাগের চেয়ারম্যান ও ইনস্টিটিউটের পরিচালকদেরকে চিঠি দেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিস।
চিঠিতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি আইন বিভাগের কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থী পূর্ব অনুমতি না নিয়ে ‘প্রোডাক্টিভ রমাদান’ শিরোনামে একটি সেমিনার আয়োজনের উদ্দেশ্যে বিশ্ববিদ্যালয়স্থ বঙ্গবন্ধু টাওয়ার ভবনে জমায়েত করে। ফলে, সেখানে একটি অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটে এবং আইন অনুষদের কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়। বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ রাষ্ট্রীয় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করেছে। পরবর্তীতে কিছু রাজনৈতিক সংগঠন ও রাজনৈতিকভাবে পরিচিত ব্যক্তিবর্গ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে বিষয়টিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য একটি কমিটি গঠন করেছে। কমিটি তদন্ত করে এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে কাজ করছে।
এতে আরও বলা হয়, এমতবস্থায় শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ও অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়ানোর জন্য এ ধরনের কোনো কর্মকাণ্ড পরিচালনার অনুমতি না দেওয়ার অনুরোধ জানানো যাচ্ছে।