স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, রাজধানীর ঝুঁকিপূর্ণ মার্কেটগুলো চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আর পুনর্বাসনের জন্য যৌক্তিক সিদ্ধান্ত নেবে সিটি করপোরেশন।
আজ বুধবার (০৫ এপ্রিল) বিকেল ৩টার দিকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, সকাল ৬টা ১০ মিনিটে যখন আগুন লাগে তার দুই-তিন মিনিটের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের ইউনিট এসে নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। কিন্তু চোখের সামনে আগুন নিমিষেই প্রসারিত হয়ে যায়। ফায়ার সার্ভিসের এক্সপার্ট কর্মকর্তারা এলেও নানা কারণে তারা প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়েছেন। পাশে পুলিশ হেড কোয়ার্টারে আগুন লেগেছিল। কিছু ক্ষতি পুলিশ হেড কোয়ার্টারেও হয়েছে। কিন্তু আগুনে চারটি মার্কেট সম্পূর্ণভাবে ধংস হয়ে গেছে। আমাদের ফায়ার সার্ভিসের বেশ কয়েকজন সদস্য আহত হয়েছেন।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠনের কথা উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগুনে কারও গাফিলতি ছিল কি না অথবা পরবর্তী সময়ে আমাদের কী করণীয় সেই দিকনির্দেশনা পাওয়া যাবে। ভবিষ্যতে যাতে এমন বড় অগ্নিকাণ্ড না হয় সেক্ষেত্রে ফায়ার সার্ভিসের নির্দেশনা মেনে চলবেন।
ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্য করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আসন্ন ঈদকে টার্গেট করে তারা বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়দের কাছ থেকে টাকা নিয়ে মালামাল তুলেছিলেন। কিন্তু ভয়াবহ আগুনে সবকিছু ধ্বংস হয়ে গেছে। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী সব সময় মনিটর করছেন এবং কী করা যায় তার সিদ্ধান্ত তিনি দেবেন।
ব্যবসায়ীদের পুরর্বাসন করবেন কী না অথবা সরকার অন্য কোনো চিন্তা করছে কী না, এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটার সিদ্ধান্ত হবে। এটা সিটি করপোরেশন টেন্ডারও করেছিল। একজন কন্ট্রাক্টও করেছিল। তারপর ব্যবসায়ীদের অনুরোধে হাইকোর্ট স্থগিতাদেশ দেন। আধুনিক ও নিরাপদ মার্কেট যাতে হতে পারে সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করবে সিটি করপোরেশন।
তিনি আরো বলেন, ফায়ার সার্ভিস যেগুলো ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিত করেছে কিংবা করবে সেগুলো যেন ব্যবসায়ীরা পরিত্যাগ করেন। রাজধানীর ঝুঁকিপূর্ণ মার্কেটগুলো চিহ্নিত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে। অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত বঙ্গবাজারে আগেও ১০ বার নোটিশ দেয়া হয়েছিল।
পানির সংকট নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ফায়ার সার্ভিসকে আমরা ঢেলে সাজাচ্ছি। পানির সরবরাহ না থাকলে ফায়ার সার্ভিস অসহায় হয়ে পড়ে। পানির ব্যবস্থা থাকার জন্য সিটি করপোরেশন ও রাজউক ব্যবস্থা নেবেন।
এদিকে বঙ্গবাজারে এখনো আগুন পুরোপুরি নেভেনি। বুধবার দুপুরে ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, অতিরিক্ত পণ্য মজুদ থাকায় আগুন স্থায়ীভাবে নেভাতে সময় লাগছে। তবে, পুরো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং ফের আগুনের সূত্রপাত হওয়ার আশঙ্কা নেই। ফায়ার সার্ভিসের ১২ টি ইউনিট এখনো সেখানে কাজ করছে বলে জানায় ফায়ার সার্ভিস।