আর কখনো রাজনীতিতে জড়াবে না বলে সরকারি মহলে মুচলেকা দিয়েছে কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। সংগঠনটির নেতারা আরও এও জানিয়েছেন, কোনো রাজনৈতিক দলের অংশও হবেন না তারা। রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রকাশ্য বা গোপন কোনো সম্পর্কেই জড়াবে না তারা।
তবে এসবের বিপরীতে হেফাজতে ইসলাম বেশ কিছু শর্তও দিয়েছে। শর্ত অনুযায়ী, শীর্ষনেতা মামুনুল হকসহ যেসব নেতা কারাবন্দি রয়েছেন তাদের সবাইকে ছেড়ে দিতে হবে এবং মামলা থেকে অব্যাহতি দিতে হবে। আওয়ামী লীগ ও হেফাজতে ইসলাম গত বছর ১৭ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করে এ মুচলেকা দেয় এবং এসব শর্ত বা দাবি জানায়।
দেশের শীর্ষপর্যায়ের এক দৈনিক পত্রিকার সাথে আলাপে এমনটাই দাবি করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা।
আগে হেফাজত নেতারা তিন মন্ত্রীর সঙ্গে একাধিক বৈঠক করে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করেন। তারপর দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে মুচলেকা দেন।
হেফাজতে ইসলাম যেসব শর্ত দিয়েছে তারমাঝে অন্যতম হলো: কাদিয়ানি সম্প্রদায়কে অমুসলিম ঘোষণা করতে এবং বাংলাদেশের কওমি মাদ্রাসাগুলোর বৃহত্তম বোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশকে (বেফাক) সরকারি নীতিমালায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
তবে কাদিয়ানি সম্প্রদায় বিষয়ে হেফাজতের দাবি আপাতত আমলে নেওয়া হয়নি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নতুন ঝামেলায় জড়ানো যাবে না বলে হেফাজত নেতাদের বলা হয়েছে। বেফাক ইস্যুতেও আপাতত কোনো উদ্যোগ নিতে চায় না সরকার। বেফাককে সরকারি নীতিমালায় অন্তর্ভুক্ত করার দাবি মানাও আপাতত অসম্ভব, জানিয়েছে সরকার।
আওয়ামী লীগের একাধিক নেতাদের ভাষ্য, একই বৈঠকে হেফাজত নেতাদের বলা হয়েছে, সরকারের বিরুদ্ধে ধর্মীয় বিভিন্ন অপপ্রচার বন্ধে তাদের সহায়তা প্রয়োজন। বিশেষ করে জামায়াতবিরোধী অবস্থান নিয়ে কাজ করতে হবে হেফাজতকে। হেফাজত নেতারা বলেছেন, জামায়াত ইস্যুতে তারা কোনো ছাড় দেবে না। জামায়াতকে তারা ইসলামের ধারক-বাহক মনে করে না।
তবে এতকিছুর মাঝে আশ্বাসের বিষয়, সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে থেকে হেফাজত নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার ও তাদের মুক্তির আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। তবে মামুনুল হক এবং আরও কয়েকজনকে এখনই মুক্তি দেওয়া সম্ভব হবে না বলে জানানো হয়েছে। যে প্রক্রিয়ায় মামুনুল হকের মুক্তি সম্ভব, তা বেশ সময়সাপেক্ষ।