জাবি প্রতিনিধি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) চলাচলকারী অটোরিকশাগুলোকে টাকার বিনিময়ে লাইসেন্স করিয়ে দেওয়া এবং দোকানপাট থেকে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের এক নেতার বিরুদ্ধে।
অভিযুক্ত ওই ছাত্রলীগ নেতা হলেন রাকিবুল ইসলাম সজীব। তিনি ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ৪৩ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। তিনি শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি পদে রয়েছেন। তিনি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেলের অনুসারী।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে লাইসেন্সধারী ৩০০টি রিকশা চলাচল করে। এসব রিকশা লাইসেন্স পেতে হলে প্রয়োজন হয় সজিবের সুপারিশ। অভিযোগ রয়েছে, সজিব এবং এস্টেট শাখার এক কর্মকর্তা মিলে এসব রিকশা লাইসেন্স করিয়ে দিতে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেন।
জানা যায়, ২০২২ সালের শুরুর দিকে অটোরিকশায় ধাক্কা খেয়ে গুরুতর আহত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের এক ছাত্রী। এ ঘটনার পর ইঞ্জিনচালিত সমস্ত রিকশা বন্ধ করে দেন তারা। এরপর দীর্ঘদিন রিকশা চলাচল বন্ধ থাকার পর ফের ক্যাম্পাসে অটোরিকশা চলাচল অনুমতি দেয় প্রশাসন। তবে বেপরোয়া রিকশা নিয়ন্ত্রণ করতে লাইসেন্স করার জন্য আবেদন করতে বলে প্রশাসন।
অভিযোগ রয়েছে, এসব রিকশা লাইসেন্স করতে ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রাকিবুল ইসলাম সজিব এস্টেট শাখার এক কর্মকর্তা মিলে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেন। এভাবে নিজেদের পছন্দমতো রিকশার লাইসেন্স করার ব্যবস্থা করেছিলেন তারা।
ক্যাম্পাসের রিকশাচালকরা জানান, যারা দীর্ঘদিন ক্যাম্পাসে রিকশা চালাতেন তাদের অনেকে সজিবকে টাকা না দেওয়ায় তারা লাইসেন্স পাননি।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকার খাবারের দোকানপাটসহ বিভিন্ন দোকান থেকে চাঁদাবাজির অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
রিকশা আটকে টাকায় সুরাহা:
গত বছরের ২৮ আগস্ট রাতে একটি অটোরিকশা বিশ্ববিদ্যালয়ের মওলানা ভাসানী হলের ছাত্রলীগের দুই কর্মীর মোটরসাইকেলে ধাক্কা দেয়। এতে মোটরসাইকেলে থাকা একজন মাথায় আঘাত পান। মোটরসাইকেলটিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরে ওই দুই ছাত্রলীগ কর্মী তাঁদের হলের বন্ধুদের ডেকে অটোরিকশাটি আটক করে মওলানা ভাসানী হলের সামনে নিয়ে যান। তাঁরা চালকের কাছে চিকিৎসার ব্যয়ভার এবং
মোটরসাইকেলের ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। পরে বিষয়টি সমাধানে সজিবসহ আরও কয়েকজন নেতা মিলে ২০ হাজার টাকা আদায় করেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ছাত্রলীগের সহসভাপতি রাকিবুল ইসলাম সজিব বলেন, আমি এই রিকশা লাইসেন্স করানোর কাজের সাথে কোনোভাবেই জড়িত না৷ আর একইভাবে আমি দোকান থেকে কোনো চাঁদাও নেইনি। আমার সংগঠন ছাত্রলীগ এসব কাজকে কখনোই সাপোর্ট করে না৷
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল বলেন, আমার কাছে এখন পর্যন্ত এরকম কোনো অভিযোগ আসেনি৷ অভিযোগ পেলে অবশ্যই আমরা সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিবো। তবে আমি যতদুর জানি এই অভিযোগ ভিত্তিহীন।