বাংলা সাহিত্যের প্রধানতম কবিদের একজন জীবনানন্দ দাশ। বনলতা সেন কাব্যের এই কবি জীবন্ত হয়ে আছে যেন রূপসী বাংলার পরতে পরতে। ‘নির্জনতা’র এই কবির ১২৬ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে নানা আয়োজন করেছে ঝালকাঠির সাংস্কৃতিক সংগঠন কবিতা চক্র। একইদিনে সংগঠনটির ৩৯ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করা হয়।
দিনটিকে কেন্দ্র করে ঝালকাঠির রাজাপুরে আজ (১৭ ফেব্রুয়ারি) কবির জন্মভূমির সংগ্ৰহশালা , ধানসিঁড়ি নদীর তীরে সাংস্কৃতিক সংগঠন কবিতা চক্রের উদ্যোগে আলোচনা সভা, কবির কবিতা আবৃত্তি , স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি ও গানসহ নানা মাধ্যমে পালন করা হয়েছে।
কবিতা চক্রের সাধারণ সম্পাদক আল আমিন বাকলাই ও রাজাপুর সাংবাদিক ক্লাবের সহ-সভাপতি আলমগীর শরীফ তাদের বক্তব্যে বলেন, রবীন্দ্র-উত্তর বাংলা কবিতায় জীবনানন্দই জুড়ে বসেছেন। নির্জনতার কবি হিসেবে খ্যাত হলেও জীবনানন্দ দাশ একজন কাল ও ইতিহাস-সচেতন কবি ছিলেন। আধুনিক কাব্যকলার বিচিত্র তত্ত্ব প্রয়োগ ও শব্দ নিরীক্ষার ক্ষেত্রে তাঁর অনন্যতা বিস্ময়কর। বিশেষত কবিতার উপমা প্রয়োগে জীবনানন্দের নৈপুণ্য তুলনাহীন। কবিতাকে তিনি মুক্ত আঙ্গিকে উত্তীর্ণ করে গদ্যের স্পন্দন যুক্ত করেছিলেন।’
এ ধারা পরবর্তী কবিদের প্রবলভাবে প্রভাবিত করেছে। তাঁদের জীবনবোধকে নাড়া দিয়েছে।
এ দিকে আয়োজিত অনুষ্ঠানে শিমুল সুলতানা হ্যাপি ও হৈমন্তী শুক্লার সঞ্চালনায় কবি জীবনানন্দ দাশের জীবন ও সৃষ্টি নিয়ে আলোচনা করেন, রিয়াজ আহসান রুবেল, আলমগীর শরীফ, জহিরুল ইসলাম বাদল, বিজন বেপারী, বাউল সালমাসহ অনেকে।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, কবির পৈতৃক ভিটা ছিল রাজাপুরে। আমরা দাবি জানাচ্ছি, কবির নামে শিক্ষা ও গবেষণার জন্য একটি বড় প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার।
বক্তারা এ সময় রাজাপুরে নিয়মিত জীবনানন্দ দাশের উৎসব উদযাপনের জন্য সাংস্কৃতিক সংগঠন কবিতা চক্র ও জেলা প্রশাসকের প্রতি আহ্বান জানান।
আল আমিন বাকলাই’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন ঝালকাঠি জেলা পুলিশ সুপার উজ্জ্বল কুমার রায়, বিশেষ অতিথি ছিলেন রাজাপুর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা ইউএনও রাহুল চন্দ , উদ্ধোধন স্কুলের প্রধান শিক্ষক , বিশিষ্ট কবি আনিসুর রহমান পলাশ ও কবি সেলিম আহমেদ। সহযোগিতায় ছিলো ছালমা শিল্পীগোষ্ঠী ও সংশপ্তক। আরও উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সমাজ সেবক, রাজনৈতিক ব্যাক্তি, ব্যবসায়ী ও সাংবাদিকবৃন্দরা।