মো. সজল মিয়া,দিনাজপুর প্রতিনিধি:রেলওয়ের সেবার মান বৃদ্ধির দাবিতে এবার দিনাজপুর রেলস্টেশনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন তিন ছাত্র ও এক ব্যবসায়ী। এই দাবিতেই ১৩ দিন ধরে ঢাকায় ও চারদিন চট্টগ্রামে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার(২১ জুলাই) বাংলাদেশ রেলওয়ের অব্যবস্থাপনা পরিবর্তনে ছয় দফা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি লেখা প্লেকার্ড নিয়ে তারা দিনাজপুর রেলস্টেশনের ১নং প্লাটফর্মে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। এ কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন বলেও জানিয়েছেন তারা।
এই কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন দিনাজপুরের বিরল উপজেলার বাসিন্দা ও দিনাজপুর সরকারি কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র মো. একরামুল হক আবির, সদর উপজেলার পৌর এলাকার ব্যবসায়ী গোরাম রাব্বানী খুরশেদ, রংপুর সরকারি সিটি কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্র এবং নবাবগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা আহম্মেদ আসাব শোভন, ভাঙ্গুড়া উপজেলার বাসিন্দা এবং পাবনা পলিটেকনিকেলের শিক্ষার্থী আল আমির ইসলাম।
এ আন্দোলনের সাথে একত্মতা ঘোষণা করেছেন অনেকেই। এদের মধ্যে একজন শহরের কালিতলা এলাকার বাসিন্দা আফসানা ইমু। তিনি জাগ্রত সমাজকল্যাণ সংস্থার সভাপতি।
এই কর্মসূচি পালনকালে তারা ঢাকায় কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে অবস্থান কর্মসূচির সূচনাকারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মহিউদ্দিন রনির প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে বক্তব্য রাখেন এবং ভুক্তভোগী ট্রেনযাত্রীদের চলমান প্রতিবাদের সঙ্গে সরব হওয়ার আহ্বান জানান। এ সময় ট্রেনযাত্রীরা তাদের এ আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানান।
ছয় দফা দাবি নিয়েই তারাও আন্দোলনে নামে। এর মধ্যে আছে–
১. ‘সহজ ডটকম’ কর্তৃক যাত্রী হয়রানি অবিলম্বে বন্ধ করা অথবা সহজকে বয়কট করা, টিকিট সিন্ডিকেট বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া,
২. টিকিট ক্রয়ের ক্ষেত্রে সর্বসাধারণের সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা।
৩. ট্রেনের জনসাধারণের জানমালের শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা
৪.ট্রেনে ন্যায্য দামে খাবার বিক্রি, বিনা মূল্যে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ও স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা
৫. ট্রেনের সিটসংখ্যা বাড়ানো অথবা ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো।
৬. সঠিক সেবার মান ও তথ্যের জবাবদিহি নিশ্চিতে শক্তিশালী মনিটরিং টিম গঠন করা।
এ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া মো. একরামুল হক আবির বলেন, অসংখ্য ট্রেনযাত্রী টিকিট কালোবাজারিদের কাছে নানা ভোগান্তির শিকার হন। প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে মাঝে মাঝে অভিযান পরিচালনা করেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না। যে সাজা দেওয়া হয় তাতে তারা খুব অল্প সময়ের মধ্যে বেরিয়ে এসে আবারও একই কাজ করছেন। আমরা রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের নানা অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার অবসান চাই।
তিনি আরও জানান, ঢাকায় রনি ভাইয়ের দেওয়া ছয় দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত দিনাজপুরেও অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। ভুক্তভোগী যাত্রীদের কাছ থেকেও বেশ সাড়া পাচ্ছি আমরা। অনেকে আমার সঙ্গে এই প্রতিবাদে অংশগ্রহণ করছেন।
আফসানা ইমু বলেন, আমরা আগে সাহস না পেলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মহিউদ্দিন রনি ভাইয়াকে দেখে সাহস পেয়েছি। এই অনিয়মগুলো বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চালিয়ে যাব। দিনাজপুরসহ দেশের সব স্টেশন দালাল, কালোবাজারিমুক্ত দেখতে চাই।
তারা মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশনে এই কর্মসূচি পালন করছেন। বুধবার বিকেল সাড়ে ৩টার সময় এবং বৃহস্পতিবার সকালেও তাদেরকে স্টেশনের প্লাটফর্মে অবন্থান করতে দেখা যায়।