পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন জানিয়েছেন, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন ইস্যুতে মিয়ানমারকে চাপ দেওয়ার পরিবর্তে বাংলাদেশের ওপর দায় চাপাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো।
বুধবার (১৬ আগস্ট) সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ তথ্য জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো চায় বাংলাদেশ যেন রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দেয়। তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে কাজে লাগাতে বলছে তারা।’
ব্রিকসে বাংলাদেশের সদস্যপদ নিয়ে তিনি বলেন, ‘ব্রিকসে বাংলাদেশের সদস্যপদ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। ২১ আগস্ট ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী।’
গত রবিবার (১৩ আগস্ট) পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যুতে মার্কিন কংগ্রেসম্যান এড কেইস ও রিচার্ড ম্যাককর্মিকও এমন বার্তা দেন।
যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসম্যানরা এমন পরামর্শ দেন যখন বিশ্বের শক্তিশালী দেশগুলোকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ইস্যুতে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে বারবার আহ্বান জানাচ্ছে বাংলাদেশ।
জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামেও বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ সরব ভূমিকা রাখছে।
মার্কিন দুই কংগ্রেসম্যান এ অবস্থায় রোহিঙ্গাদের কাজকর্ম দিয়ে তাদের নিজেদের মতো করে নেওয়ার (অ্যাবজর্ব) পরামর্শ দেন।
কংগ্রেসম্যানদের সঙ্গে বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘বৈঠকে রোহিঙ্গা নিয়ে কথা হয়েছে। তারা (কংগ্রেসম্যান) বলেছে, এই জনগোষ্ঠীর কাজকর্মতো কিছুই নেই। আপনারা তাদের কাজকর্ম দেন, তাদের অ্যাবজর্ব করে নেন।’
ওই সময় মার্কিন কংগ্রেসম্যানদের রোহিঙ্গা ইস্যুতে তাদের অঙ্গীকারের কথা স্মরণ করিয়ে দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি কংগ্রেসম্যানদের বলেন, ‘দুনিয়াতে আমরা সবচেয়ে বেশি ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। আমাদের এখানে প্রতিবছর গড়ে ২০ লাখ ছেলে-মেয়ে মার্কেটে আসছে। তাদের সবাইকে আমরা চাকরি দিতে পারি না। তারা বিদেশে গিয়ে কর্মী ভিসায় কাজ করেন। রোহিঙ্গাদের কীভাবে কাজ দেবো?
তিনি আরও বলেন, ‘তারা নিজ দেশে ফেরত যেতে চায়। আমরাও চাই, তারা ফেরত যাক। আপনারাও কিছু নিয়ে যান। আপনারা বলেছিলেন, কিছু নেবেন। একটাও নেননি।’
মুসলিম জনগোষ্ঠী রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে দমন পিড়নের শিকার হয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশে আসতে থাকেন। ২০১৭ সাল নাগাদ রোহিঙ্গাদের সংখ্যা ৪ লাখ ছাড়ায়। ২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অভিযানের মুখে বাংলাদেশ সীমান্তে রোহিঙ্গাদের ঢল নামে। কয়েক মাসেই এই সংখ্যা ৭ লাখ ছাড়িয়ে যায়। ওই সময় ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে উদ্বাস্তু হয়ে অবস্থান নেয়।