নওগাঁ সদর উপজেলার চন্ডিপুর ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ে অফিস সহকারী সুলতানা জেসমিনকে (৪৫) গত বুধবার সকালে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগে আটক করে র্যাব। আটকের দুদিন পর শুক্রবার (২৪ মার্চ) সকালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। স্বজনদের অভিযোগ করেন, র্যাব হেফাজতে নির্যাতনের কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে।
র্যাবের জানিয়েছে, সুলতানা জেসমিনকে প্রতারণার অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বুধবার আটক করা হয়। আটকের পর অসুস্থ হয়ে তিনি মারা গেছেন।
এ বিষয়ে নিহত সুলতানার মামা নওগাঁ পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর নাজমুল হক বলেন, বুধবার সকালে অফিসে যাওয়ার উদ্দেশ্যে তার ভাগনি বাসা থেকে বের হন। ওই দিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মুক্তির মোড় থেকে একটি সাদা মাইক্রোবাসে র্যাবের লোকজন তাকে ধরে নিয়ে যায়। তবে তাকে র্যাবের কোন ক্যাম্পে নেয়া হয়েছে তারা কিছু জানতেন না।
তিনি বলেন, দুপুর ১২টার দিকে খবর পান সুলতানাকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গিয়ে দেখেন ভাগনি কোনো কথা বলতে পারছে না। কিছুক্ষণ পর তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার সকালে তার মৃত্যু হয়। তবে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে শনিবার।
নওগাঁ সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মৌমিতা জলিল একটি গণমাধ্যমকে জানান, বুধবার দুপুরে সুলতানা জেসমিন নামের এক রোগীকে নিয়ে হাসপাতালে আসেন র্যাবের সদস্যরা। রোগীর অবস্থা গুরুতর হওয়ায় রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
তিনি বলেন, হাসপাতালেই সুলতানা জেসমিনের পরিবারের লোকজন র্যাবের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ করেন।রাজশাহী মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবারে ওই রোগী মারা যান।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে র্যাব-৫ এর কোম্পানি কমান্ডার উপ-অধিনায়ক এএসপি মাসুদ রানা জানান, আর্থিক প্রতারণার অভিযোগে সুলতানা জেসমিনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মুক্তির মোড় এলাকা থেকে র্যাবের হেফাজতে নেয়া হয়। কিন্তু আটকের পরপরই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে দ্রুত তাকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে নেয়া হয়।
তিনি বলেন, প্রাথমিক চিকিৎসার পর চিকিৎসকেরা তাকে রাজশাহীতে নেয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু রাজশাহীতে নেয়ার পর তার অবস্থা আরো খারাপ হয়। শুক্রবার রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্ট্রোক করে তিনি মারা যান।
শনিবার দুপুরে আইনি প্রক্রিয়া শেষে স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়।