ভোলা থেকে ঢাকাগামী কর্ণফুলী-৪ লঞ্চ থেকে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে নিখোঁজ হওয়ার চার দিন পর মেঘনা নদী থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ভোলা সরকারি কলেজের অনার্স পড়ুয়া ছাত্রী ও ছাত্রদল নেত্রী সুকর্ণা আক্তার ইপ্সিতার মরদেহ। রোববার (২১ জুন) রাতে লক্ষ্মীপুর অংশের মেঘনা নদীতে ভেসে থাকা অবস্থায় মরদেহটি দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
ইপ্সিতার বাবা মো. মাসুদ রানা জানান, পরিবার মরদেহ উদ্ধারের খবর পেয়েছে ২২ জুন বিকালে। ছবি দেখে তিনি নিশ্চিত হন এটি তার মেয়ে ইপ্সিতা। মরদেহের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার আগ পর্যন্ত পুলিশের পক্ষ থেকে মরদেহটি অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবে সংরক্ষণ করা হয়। পরে আইনি প্রক্রিয়া শেষে ২২ জুন সকালে লক্ষ্মীপুরেই দাফন করা হয়।
ইপ্সিতার পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত ১৭ জুন সকালে তিনি প্রাইভেট পড়াতে যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হন। এরপর আর তিনি বাসায় ফেরেননি। পরদিন তার বাবা ভোলা সদর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। সেই জিডির সূত্র ধরেই পুলিশ ইপ্সিতার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে লক্ষ্মীপুরে অজ্ঞাত নারীর মরদেহ উদ্ধারের তথ্য জানায়।
ইপ্সিতা ভোলা সরকারি কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী এবং কলেজ ছাত্রদলের গুরুত্বপূর্ণ পদপ্রার্থী ছিলেন। তার সহপাঠী ও শুভানুধ্যায়ীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ঘটনার ন্যায়বিচার দাবি করছেন। কেউ এটিকে ‘পরিকল্পিত হত্যা’ বলছেন, আবার কেউ দাবি করছেন, লঞ্চে নির্যাতনের শিকার হয়ে তিনি নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তবে এ বিষয়ে নিশ্চিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে ইপ্সিতার পরিবার জানান, তারা এখনই কাউকে দায়ী করছেন না। তবে তারা দাবি করছেন— এটি হত্যা না আত্মহত্যা, তা সঠিকভাবে তদন্তের মাধ্যমে প্রকাশ করা হোক।
ঘটনার বিষয়ে কর্ণফুলী-৪ লঞ্চের সুপারভাইজার নান্টু বাবু জানান, ১৭ জুন সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে ভোলার ইলিশা ঘাট থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায় লঞ্চটি। কালিগঞ্জ ঘাট পার হওয়ার কিছু সময় পর খবর পান, এক নারী যাত্রী তৃতীয় তলা থেকে নদীতে ঝাঁপ দিয়েছেন। লঞ্চটি দ্রুত ঘুরিয়ে ঘটনাস্থলে ফিরে গিয়ে লাইফবয়া ফেলা হয়। একবার ওই তরুণীকে পানিতে ভেসে থাকতে দেখা গেলেও তাকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। ঘণ্টাখানেক খোঁজাখুঁজির পর কোস্টগার্ডকে জানিয়ে লঞ্চটি পুনরায় ঢাকার পথে রওনা দেয়।