লস অ্যাঞ্জেলেসে সরকারঘোষিত কারফিউ কার্যকর হওয়ার পর ডাউনটাউন এলাকায় কড়াকড়ি আরোপ করেছে স্থানীয় পুলিশ। কারফিউ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে ব্যাপক ধরপাকড়।
মাঠপর্যায়ের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, কারফিউ চলাকালীন এলএপিডি সদস্যরা বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করেছে। সিএনএনের একজন প্রতিবেদক জানিয়েছেন, ঘটনাস্থলে ১০ থেকে ২০ জনের মতো লোককে আটক করা হয়েছে।
এক প্রত্যক্ষদর্শীর মতে, এক বিক্ষোভকারীকে জোরপূর্বক মাটিতে ফেলে দিয়ে তার হাত পেছনে বেঁধে ফেলা হয় প্লাস্টিকের টাই দিয়ে। যদিও অধিকাংশ বিক্ষোভকারী এরই মধ্যে এলাকা ত্যাগ করেছে, তবুও পুলিশ পুরো এলাকা খালি করতে ধাপে ধাপে অভিযান চালিয়েছে।
কারফিউ বাস্তবায়নের সময় শহরের লিটল টোকিও এলাকায় একটি হেলিকপ্টার চক্কর দিতে দেখা গেছে। ফ্লাইট ট্র্যাকিং ডেটা অনুযায়ী, ক্যালিফোর্নিয়া হাইওয়ে পেট্রোলের হেলিকপ্টারটি প্রায় এক হাজার ফুট ওপর দিয়ে ওড়েছে।
এই কঠোর পুলিশি পদক্ষেপের ফলে লস অ্যাঞ্জেলেস শহরজুড়ে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
বিক্ষোভের সূত্রপাত হয় অভিবাসনবিরোধী অভিযান নিয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্যের পর। ট্রাম্প লস অ্যাঞ্জেলেসে আইসের(ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট) কড়া অবস্থানের প্রতি সমর্থন জানান। তার বক্তব্যের পরই ক্যালিফোর্নিয়াসহ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
সান্তা আনা, সান ফ্রান্সিসকোসহ ক্যালিফোর্নিয়ার বেশ কিছু শহরে বিক্ষোভকারীরা রাজপথে নামে। সান ফ্রান্সিসকোতে প্রায় ১৫০ জনকে আটক করা হয়।
এই বিক্ষোভ ক্যালিফোর্নিয়ার গণ্ডি পেরিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য রাজ্যেও ছড়িয়ে পড়ে। নিউইয়র্ক সিটির ফেডারেল ভবনের সামনে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করায় অনেককেই গ্রেফতার করা হয়।
আটলান্টায় আইস অফিসের সামনে প্রতিবাদ হয়, যার ভিডিও সম্প্রচার করেছে সিএনএনের সহযোগী চ্যানেল ডব্লিউএসবি। লুইসভিল, কেনটাকি এবং ডালাস, টেক্সাসেও অভিবাসনবিরোধী নীতির প্রতিবাদে বিক্ষোভ হয়েছে।
এছাড়া এক প্রভাবশালী শ্রমিক নেতার গ্রেফতারকে কেন্দ্র করে আলাদা করে আন্দোলন হয়েছে। লস অ্যাঞ্জেলেসে আন্দোলনে অংশ নিতে গিয়ে ডেভিড হুয়েরতা নামের ওই শ্রমিক নেতা আটক হন এবং পরে জামিনে মুক্তি পান।
তার গ্রেফতারকে ঘিরে বস্টন, পিটসবার্গ, শার্লট, সিয়াটল ও ওয়াশিংটন ডিসিসহ একাধিক শহরে নতুন করে প্রতিবাদ শুরু হয়।
যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে এই বিক্ষোভের পেছনে মূল ইস্যু অভিবাসন নীতির কড়াকড়ি, যা অনেক নাগরিক ও অধিকারকর্মীর মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগ তৈরি করেছে। পুলিশের কঠোর অবস্থানের ফলে অনেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করছেন, পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হতে পারে।