শাপলা চত্বরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে তৎকালীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে দোষারোপ করা সঠিক নয় বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সোহেল তাজ। তিনি বলেছেন, “আশরাফ ভাই হয়তো কিছু কথা বলে থাকতে পারেন, তবে সব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল ওপর মহল থেকে।”
শুক্রবার (২ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে ‘হাঁটে হাড়ি ভাঙা’ শিরোনামে একটি পোস্ট দিয়ে সোহেল তাজ এ কথা বলেন।
২০১৩ সালের ৫ মে হেফাজতে ইসলাম ঢাকার মতিঝিলের শাপলা চত্বরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছিল। কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক এই সংগঠনটি ব্লগারদের বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ ও নারী উন্নয়ন নীতির বিরোধিতাসহ ১৩ দফা দাবি তুলে ধরেছিল।
সেদিন দিনভর উত্তেজনা চলার পর রাতের আঁধারে পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির যৌথ অভিযানে শাপলা চত্বর খালি করা হয়। পরিস্থিতি এতটাই জটিল হয়ে উঠেছিল যে রাজধানীর বাণিজ্যিক এলাকা মতিঝিলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল।
শাপলা চত্বর নিয়ে সৈয়দ আশরাফের কিছু মন্তব্য সেসময় আলোচনায় আসে। তিনি হেফাজতের কর্মসূচির সময় বলেছিলেন, “আমাদের সরলতাকে দুর্বলতা ভাববেন না। রাতের মধ্যেই আপনারা ঘরে ফিরে যাবেন এবং ভবিষ্যতে আপনাদের আর ঘর থেকে বের হতে দেওয়া হবে না।”
পরবর্তীতে অভিযানের মাধ্যমে শাপলা চত্বর খালি করার পর আশরাফুল ইসলাম বলেছিলেন, “হেফাজতে ইসলাম বিড়ালের মতো লেজ গুটিয়ে চলে গেছে।”
তবে এ ঘটনাকে ঘিরে আশরাফের ভূমিকা নিয়ে নানা সমালোচনা হলেও সোহেল তাজ মনে করেন, সৈয়দ আশরাফ ব্যক্তিগতভাবে এসব সিদ্ধান্ত নেননি।
সোহেল তাজ তার পোস্টে বলেন, “অনেকেই সৈয়দ আশরাফকে দোষারোপ করছেন, যা ঠিক নয়। কারণ, সব সিদ্ধান্ত ওপর থেকে আসতো। আশরাফ ভাই পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য যা বলেছেন, তা তার দায়িত্ববোধ থেকেই।”
তিনি আরও বলেন, আশরাফের জানাজা নিয়ে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নাকি বিরক্তি প্রকাশ করেছিলেন। শেখ হাসিনা প্রশ্ন তুলেছিলেন, “ও এত বড় কী হয়ে গেল যে তিনটি জানাজা পড়াতে হবে?”
এর জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানিয়েছিলেন, “নেতাকর্মীরা আশরাফ ভাইকে ভালোবাসেন। তাদের দাবি না মানলে পরিস্থিতি সামলানো যাবে না।”
সোহেল তাজের মন্তব্য শাপলা চত্বরের ঘটনাকে ঘিরে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তার বক্তব্যে পরিষ্কার হয়েছে যে, শাপলা চত্বর অভিযান ছিল উচ্চপর্যায় থেকে নেওয়া সিদ্ধান্তের অংশ। সৈয়দ আশরাফ শুধুমাত্র দলে তার দায়িত্ব পালন করেছেন।
সোহেল তাজের এই ফেসবুক পোস্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার ঝড় তুলেছে এবং সৈয়দ আশরাফের ভূমিকাকে নতুনভাবে মূল্যায়ন করার দাবি উঠছে।