যশোরের শার্শার বেলতলা আম বাজারে মটর শ্রমিক কল্যাণ তহবিল সংগ্রহের নামে প্রকাশ্য চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে।
যশোর ও সাতক্ষীরা দুই জেলার সীমানা সংলগ্ন এ বাজারে ট্রাক প্রতি এক হাজার টাকা চাঁদা নেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। প্রতিদিন এ বাজারে ছোট বড় ১২০ থেকে ১৫০ ট্রাক আম লোড আনলোড হয়।
সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী কৃষি পণ্যবাহী ট্রাকে লোড অনলোড’র নামে চাঁদাবাজি নিষিদ্ধ থাকলেও ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে একটি মহল বাগআঁচড়া মটর শ্রমিক ইউনিয়নের স্লিপ ব্যবহার করে প্রকাশ্য এ চাঁদা আদায় করছে। যে স্লিপে লেখা আছে বাগআঁচড়া, নাভারণ ও বেনাপোল সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন, রেজি: নং খুলনা ৬৬৯।
আড়তদারদের অভিযোগ, স্থানীয় বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী বিএনপির নেতা ও বাগআঁচড়া মটর শ্রমিক ইউনিয়নের কিছু সদস্যদের যোগসাজশে আম মৌসুমে প্রতি ট্রাক থেকে এক হাজার চাঁদা আদায় করছে। আর এ অনৈতিক কাজে সহযোগিতা করেছে এলাকার কিছু যুবক। তারা প্রতিদিন সকাল থেকে গভীররাত পর্যন্ত ট্রাকে ট্রাকে ঐ স্লিপির মাধ্যমে চাঁদা আদায় করে।
বেলতলা আম বাজারে ট্রাক লোড করতে আসা কয়েকজন চালকের কাছে এক হাজার টাকার লোডিং স্লিপের বিষয়ে জানতে চাইলে তাদের মুখে ভেসে ওঠে হতাশার ছাপ।
চালকরা জানান, টাকা না দিলে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি ও অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করা হয়। আবার এমনও বলে তাদের নির্ধারিত চাঁদার টাকা না দিলে সেখান থেকে আর ট্রাক লোড করতে দেবে না। যে কারণে ভয়ে নিরুপায় হয়ে তারা চাঁদা দিতে বাধ্য হচ্ছে।
মো. সজিব নামে এক ট্রাক চালক জানান, তিনি বেলতলা আম বাজার থেকে আম ভর্তি ট্রাক লোড করে ময়মনসিংহ যাচ্ছিল। পথিমধ্যে বাগুড়ী আমিরের মোড়ে পৌঁছালে তার গাড়ি থামিয়ে জোর করে একটি ট্রান্সপোর্টের স্লিপ ধরিয়ে দিয়ে পাঁচশত টাকা নেয়। টাকা দিয়ে একুট সামনে গেলেই বাগআঁচড়া মটর শ্রমিক ইউনিয়নের স্লিপ দিয়ে আবারও তার কাছ থেকে পাঁচশত টাকা নেওয়া হয়। সর্বমোট তার কাছ থেকে এক হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে।
শার্শা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কে এম. রবিউল ইসলাম জানান, পণ্যবাহী ট্রাকে লোড আনলোডের নামে টাকা নেওয়ার সরকারিভাবে কোন নিয়ম নেই, যদি কোন ব্যক্তি এমন কাজ করে, তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।
এ বিষয়ে যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নূর-ই-আলম সিদ্দিকী বলেন, এমন একটি খবর পাওয়ার সাথে সাথে’ নাভারণ সার্কেল এসপি ও ওসিকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।