নড়াইলের কালিয়া উপজেলার এক শিক্ষার্থীর ঘর থেকে উদ্ধার হওয়া একটি এয়ারগানকে ‘স্নাইপার রাইফেল’ হিসেবে দাবি করেছে সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনীর এমন দাবির পর, বেশ কিছু গণমাধ্যম একইভাবে বিষয়টি প্রচার করছে।
সোমবার (৯ জুন) সকালে নড়াইল সেনা ক্যাম্প থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কালিয়া উপজেলার পুরুলিয়া গ্রামের সোহান মোল্যা (২৫) নামে এক ব্যক্তি অবৈধ একটি স্নাইপার রাইফেল ব্যবহার করে স্থানীয়দের ওপর প্রভাব বিস্তার করছিলেন—এমন সংবাদের ভিত্তিতে সেনাবাহিনী অভিযান চালায়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও দাবি করা হয়, অভিযানে সোহানের ঘরের বিছানার নিচ থেকে একটি ৪.৫ ক্যালিবারের নাইট্রো স্নাইপার রাইফেল উদ্ধার করা হয়। রাইফেলটিতে একটি টেলিস্কোপ ও সাইলেন্সার লাগানো ছিল। তবে সোহান সে সময় বাড়িতে না থাকায় তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।
ঘটনার বিষয়ে কালিয়া থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, ঘটনাটি তদন্তাধীন এবং আইনগত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
তবে অস্ত্র বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি কোনো স্নাইপার রাইফেল নয়, বরং একটি আধুনিক এয়ারগান। এর পূর্ণ নাম—PCP (Pre-Charged Pneumatic) এয়ার রাইফেল।
তথ্য বলছে, এই ধরনের রাইফেল দেখতে অনেকটা সামরিক বা স্নাইপার রাইফেলের মতো হলেও, এটি গুলি ছোড়ে বাতাসের চাপে। এর মধ্যে আগুন বা গানপাউডার ব্যবহৃত হয় না। অর্থাৎ, এটি একটি এয়ারগান, বন্দুক নয়।
এ ধরনের এয়ারগানের বৈশিষ্ট্য হলো–ক্যালিবার: .177, .22, .25 বা .30, গতি: প্রতি সেকেন্ডে ৯০০–১২০০ ফুট পর্যন্ত, স্কোপ: 4×32 বা 6-24×50 ধরনের দূরবীন, ম্যাগাজিন: সাধারণত মাল্টি-শট ও সাইলেন্সার বা মডারেটর: শব্দ কমানোর জন্য ব্যবহৃত।
আইন অনুযায়ী, বাংলাদেশে .22 ক্যালিবার পর্যন্ত এয়ার রাইফেল সাধারণত লাইসেন্স ছাড়াই ব্যবহারের অনুমতি রয়েছে। তবে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন PCP এয়ারগান অনেক সময় বন্দুক আইনের আওতায় পড়ে যেতে পারে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এগুলো বেআইনিভাবে আমদানি বা ব্যবহার করা হয়, যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তবে গণমাধ্যমের কিছু প্রতিবেদন ও সেনাবাহিনীর বক্তব্যে একে ‘স্নাইপার’ রাইফেল বলা হয়েছে।
এ ধরনের ভুল ব্যাখ্যার ফলে আওয়ামীপন্থী অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টরা এই ঘটনা ঘিরে নানা প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে।