রাজশাহীতে ইসলামী ছাত্রশিবিরকে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে ছাত্রদলের এক কর্মীর বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। ঘটনাটি নিয়ে রাজশাহীর ছাত্র রাজনীতিতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে।
ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, রাজশাহী কলেজ শাখা ছাত্রদলের কর্মী আহনাফ তাহমিদ অর্জন তার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে একটি উসকানিমূলক স্ট্যাটাস দেন। সেখানে তিনি লেখেন, শিবির মারা জায়েজ ছিল, জায়েজ আছে, জায়েজ থাকবে। এদের বেসিক হিউম্যান রাইটস থাকাও উচিত কি না এটা নিয়ে ডিবেট হওয়া উচিত।
বিষয়টি নিয়ে ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং সংগঠনের রাজশাহী মহানগর শাখার সভাপতি মোহা. শামীম উদ্দিন শুক্রবার (৩০ মে) রাতে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) বোয়ালিয়া মডেল থানায় একটি জিডি করেন। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসতাক হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আসামি আহনাফ তাহমিদ রাজশাহী নগরীর ভাটাপাড়া এলাকার বাসিন্দা এবং রাজশাহী কলেজের ইন্টারমিডিয়েটের শিক্ষার্থী। যদিও মহানগর ছাত্রদলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে এবং প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেবে।
ছাত্রশিবির এক যৌথ বিবৃতিতে অভিযুক্তের মন্তব্যকে ‘ঘৃণিত ও উসকানিমূলক’ বলে আখ্যা দিয়ে বলেন, এটি শুধুমাত্র একটি সংগঠনের বিরুদ্ধে নয়, বরং গণতান্ত্রিক পরিবেশের বিরুদ্ধে সরাসরি হুমকি। রাজশাহী মহানগর শাখার সভাপতি শামীম উদ্দিন ও সেক্রেটারি ইমরান নাজির স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, আবরার ফাহাদের মতো হত্যাকাণ্ডের পরেও যখন কেউ প্রকাশ্যে শিবির সদস্যদের হত্যার পক্ষে সাফাই গায়, তখন তা গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও শিক্ষাঙ্গনের পরিবেশের জন্য চরম হুমকি হয়ে দাঁড়ায়।
তবে এ বিষয়ে অভিযুক্ত আহনাফ তাহমিদ জানান, তিনি পরিস্থিতির চাপে ও ক্ষোভের বশে পোস্টটি দিয়েছিলেন। পরে সংগঠনের পক্ষ থেকে অনুরোধে তিনি সেটি মুছে ফেলেন। পোস্টটি ঠিক হয়নি—বুঝে গেছি। তারপরেই আমি রিমুভ করে দিই। শিবির যদি আইনি ব্যবস্থা নেয়, আমিও প্রতিক্রিয়া জানাতে প্রস্তুত আছি,বলেন তিনি।
ছাত্রদল নেতা খালিদ বিন ওয়ালিদ আবির জানান, অভিযুক্তকে তারা ব্যক্তিগতভাবে তেমন চিনেন না এবং বিষয়টি মহানগর ছাত্রদলের সিদ্ধান্তসাপেক্ষ।
এদিকে পুলিশ জানিয়েছে, জিডির ভিত্তিতে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।