কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার শিশু তানজিম সুলতানা ঝুমুরকে (৯) ধর্ষণের পর চাঞ্চল্যকর হত্যার অভিযোগে একজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
বুধবার (১ মে) র্যাব-১১ কুমিল্লা কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রেস মিটিংয়ের মাধ্যমে গ্রেফতারের বিষয়টি জানায়।
এ সময় র্যাব-১১-এর পরিচালক তানভীর মাহমুদ পাশা ঘটনার বর্ণনা দিতে আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন এবং চোখ মোছেন। পরে ধরা গলায় ঘটনার বর্ণনা দেন।
ঘটনার বর্ণনার ফলে উপস্থিত অনেক সাংবাদিককেও আবেগাপ্লুত হতে দেখা যায়।
চাঞ্চল্যকর এ ধর্ষণের পর হত্যার শিকার শিশু ঝুমুর কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার গলিয়ারা উত্তর ইউনিয়নের খিলপাড়া গ্রামের জাকির হোসেনের একমাত্র মেয়ে। সে স্থানীয় সোনালী শিশু বিদ্যানিকেতনের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিকে মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) রাতে চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি থানাধীন ফেরুয়া বাজার এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
অভিযুক্ত ব্যক্তি সদর দক্ষিণ উপজেলার খিলপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল খালেকের ছেলে মফিজুল ইসলাম প্রকাশ মফু (৩৮)।
র্যাব-১১-এর পরিচালক তানভীর মাহমুদ পাশা জানান, ঘটনার দিন ২৯ এপ্রিল সকালে ঝুমুর স্কুলে যাওয়ার জন্য বাসা থেকে বের হয়। কিন্তু বেলা ১১টা পর্যন্ত সে বাড়ি না ফিরলে তার মা স্কুলে যান। সেখানে মেয়ের কোনও হদিস না পেয়ে ফেরার পথে ঝুমুরের সহপাঠীর কাছে জানতে পারেন সে স্কুল শেষে বাড়ি চলে গেছে। বিকালে বাড়ির অদূরে ধানক্ষেতে একটি মরদেহ পড়ে আছে বলে তিনি জানতে পারেন। সেখানে গিয়ে তিনি তার মেয়ের মরদেহ শনাক্ত করেন।
এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত কয়েকজন জানান, গ্রেফতার মফিজুল ইসলাম মফুকে ঘটনাস্থলের পাশে থাকা বাঁশঝাড়ের ভেতর থেকে দ্রুত রাস্তায় উঠে আসতে দেখেছেন।
গ্রেফতার আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, নিহত ঝুমুরকে সে চিনতো। এই সুযোগে ২৯ এপ্রিল সকালে ঘটনাস্থলের পাশের রাস্তায় ওত পেতে থাকে। ঝুমুর ঘটনাস্থলের কাছাকাছি পৌঁছালে মফু তাকে রাস্তার পাশের ধানি জমিতে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। একপর্যায়ে ঝুমুর চিৎকার করার চেষ্টা করলে মফু তার মুখ ও গলা চেপে ধরে। এতে সে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা যায়।
কোনও নড়াচড়া দেখতে না পেয়ে ভিকটিমের কানে থাকা দুল ছিড়ে নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে আসামি। এ ঘটনায় মামলা করলে মফু চাঁদপুরে পালিয়ে যায়।
প্রতিবেশীরা জানান, অভিযুক্ত মফু মাদকাসক্ত ও তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য গাঁজা সেবনের বিষয়েও তথ্য পাওয়া যায়।