শ্রীলঙ্কাকে ঋণ হিসেবে দেওয়া ২০ কোটি ডলার ২০২৩ সালের মার্চের মধ্যে বাংলাদেশ ফেরত পাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর পি নন্দলাল বীরসিংহের সঙ্গে বৈঠক করে এমন আশ্বাস দেন তিনি।
বিশ্ব ব্যাংক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এর বার্ষিক সাধারণ সভায় অংশ নিতে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন গভর্নর রউফ তালুকদার। সাত দিনের এই সাধারণ সভা মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) বিশ্ব ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে শুরু হয়েছে। মূল আনুষ্ঠানিকতার ফাঁকেই শ্রীলঙ্কার গভর্নরের সাথে তার বৈঠক হয়।
ওয়াশিংটনে বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে গভর্নর রউফ তালুকদার বলেন, “শ্রীলঙ্কাকে সোয়াপ এরেঞ্জমেন্টের জন্য তিন দফায় আমরা ২০০ মিলিয়ন ডলার দিয়েছিলাম। কিন্তু শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক সংকটের কারণে সময় মত টাকাটা ফেরত দিতে পারেনি। ”
এ অবস্থায় শ্রীলঙ্কার অনুরোধে বাংলাদেশ দুই দফায় সময় বাড়িয়েছে জানিয়ে গভর্নর বলেন, “২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে তিন কিস্তিতে শ্রীলঙ্কার তা ফেরত দেওয়ার কথা রয়েছে। ”
শ্রীলঙ্কার গভর্নরের সঙ্গে আলোচনা প্রসঙ্গে রউফ তালুকদার বলেন, “খুবই ভালো মিটিং হয়েছে। শ্রীলঙ্কার গভর্নর আমাকে নিশ্চিত করেছেন, তারা এখন ঋণগুলো রিস্ট্রাকচার (পুনর্গঠন) করছেন। ভারত, জাপান ও চীনের সাথে কথা হয়েছে তাদের। আর আইএমএফ এর সঙ্গে একটা প্রোগ্রামে যাচ্ছে শ্রীলঙ্কা, সেটাও মোটামোটি কনফার্ম হয়ে গেছে। তারা হয়ত নভেম্বর-ডিসেম্বরের মধ্যে একটা ফাইনাল এগ্রিমেন্টে যাবে।
রউফ তালুকদার বলেন, “আমাকে শ্রীলঙ্কার গভর্নর কনফার্ম করেছেন, তারা আমাদের টাকাটা ফেব্রুয়ারি-মার্চের মধ্যে যে তারিখ রয়েছে, তার মধ্যে ফেরত দিতে পারবেন। এটি আমাদের জন্য খুবই ভালো খবর। ”
প্রসঙ্গত, অর্থনৈতিক সংকটে পড়া শ্রীলঙ্কাকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে গত বছর ২০ কোটি ডলার ঋণ দেয় বাংলাদেশ। প্রতি কিস্তির অর্থ ছাড়ের পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে তা ফেরত দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকট আরো তীব্র হওয়ায় এক পর্যায়ে ঋণ খেলাপির খাতায় নাম লেখাতে বাধ্য হয় দক্ষিণ এশিয়ার এই দ্বীপ দেশ। এর জেরে সরকারেও পরিবর্তন আসে। এখন রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরতে শুরু করায় আর্থিক মেরামতের পাশাপাশি ঋণ পরিশোধের দিকে যাচ্ছে শ্রীলঙ্কা।