সংকট কাটাতে এবার রাশিয়ান তেল কেনার কথা চিন্তা করছে পাকিস্তান। বিগত কয়েক মাসের বিধ্বংসী বন্যার পরে ঋণ পুননির্ধারণ করার ব্যাপারে এগুতে চেয়্বছেন পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী ইসহাক দার।
পাকিস্তান রাশিয়ার সস্তা তেল কিনতে পারে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী ইসহাক দর বলেন, ‘আমরা অবশ্যই এই বিকল্পের কথা বিবেচনা করছি। ভারত যদি রাশিয়া থেকে তেল কিনতে পারে তাহলে আমাদেরও অধিকার আছে তা করার’।
উল্লেখ্য, বন্যার কারণে দেশটির মুদ্রার তারল্য বহুলাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বাহ্যিক দুর্বলতার ঝুঁকিও অনেক বেড়েছে। ফলে গত ৬ অক্টোবর ক্রেডিট এজেন্সী ‘মুডি’ পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব রেটিং কমিয়ে এনেছে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বৈদেশিক রিজার্ভ বাড়াতে এবং সংরক্ষণ করতে সমস্ত বিকল্প পথ বের করতে হবে পাকিস্তানকে। ইতিমধ্যেই দেশটির বৈদেশিক রিজার্ভ মাত্র ১ মাসের আমদানিতে ব্যয় করার মতো নেমে এসেছে যার অধিকাংশই তেল ও গ্যাস আমদানিতে খরচ হবে।
এর আগে, প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ প্যারিস ক্লাবের কাছে ঋণ আবেদন করেছে। কিন্তু বুধবার অর্থমন্ত্রী দার বলেছিলেন, পাকিস্তান ঋণদাতা গোষ্ঠীগুলোর কাছে ঋণ চাইবে না এবং খেলাপিও হবে না।
গত বুধবারে ইসলামাবাদে এক সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আল্লাহ সহায় হলে আমরা আমাদের আর্থিক প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে পারব। আমি আপনাদের আশ্বস্ত করছি। আপনাদের চিন্তা করার দরকার নেই’।
যদিও চলতি হিসাবের ক্রমবর্ধমান ঘাটতি, ২০ শতাংশেরও বেশি মুদ্রাস্ফীতি এবং রুপির ব্যাপক অবমূল্যায়ন নিয়ে ইতিমধ্যেই পাকিস্তানের অর্থনীতিতে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। বন্যার কারণে দেশটির অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আরো দুর্বল হয়েছে। ধারণা করা হয় যে, বন্যার কারণে ৩০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি ক্ষতি হয়েছে।
গত সপ্তাহে রয়টার্সকে এক সাক্ষাতকারে ইসহাক দার বলেছিলেন, ‘পাকিস্তান ২৭ বিলিয়ন ডলার মূল্যের দ্বিপাক্ষিক ঋণের পুনর্গঠন চাইবে। তিনি আরো বলেন যে, পাকিস্তান এই বছর ম্যাচিউরড হওয়া ১ বিলিয়ন ডলার ইউরোবন্ড পরিশোধ করবে।
এমনকি গত সপ্তাহে তিনি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল এবং বিশ্ব ব্যাংকের বার্ষিক মিটিং শেষে ক্রেডিট রেটিং এজেন্সী এবং আমেরিকা প্রশাসনের সাথেও সাক্ষাত করেছিলেন।
এদিকে বিশ্বের শীর্ষ সাত ধনী দেশের সংগঠন আগামী ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে রাশিয়ার তেল রপ্তানির উপর একটি নির্দিষ্ট মূল্য বরাদ্ধের ব্যবস্থা কার্যকর করার চেষ্টা করছে। অন্যদিকে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন সমুদ্রবাহিত রাশিয়ান অপরিশোধিত তেলের উপর আমদানি নিষিদ্ধাজ্ঞা বলবত রেখেছে।