সংকট মোকাবিলায় আপাতত এলএনজি আমদানিই ভরসা বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী। তিনি বলেন, এক সময় বলা হলো বাংলাদেশ গ্যাসে ভাসছে। ওইসব বিষয়ে আশাবাদী হওয়া ঠিক, কিন্তু বেশি নির্ভর করা ঠিক হবে না।
আজ মঙ্গলবার জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। এ বছর দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘বহুমুখী জ্বালানি সমৃদ্ধ আগামী’।
প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা বলেন, গভীর সাগরে গ্যাস পেলেও তা তুলতে ১০ বছর সময় লাগবে, ততদিন আমরা কি করবো। সে জন্য সাশ্রয়ী হব, কিছু লোডশেডিং করব। আপাতত দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির মাধ্যমে এলএনজি আনতে হবে।
দেশের গ্যাসকূপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অনেকে বলেন তিনটি কূপ খনন করলে একটিতে গ্যাস পাওয়া যায়। কিন্তু কতটুকু গ্যাস পাওয়া যায়। বাপেক্স গত ৫ বছরে ৩৪টি কূপ করেছে। সাগর থেকে কনোকো ফিলিপস ছেড়ে গেল কেন, পসকো দাইয়ু কেন ছেড়ে গেল। সেগুলো বিবেচনায় নিতে হবে। গত ১০ বছরে মিয়ানমার তেমন কোনো গ্যাস আবিষ্কার করতে পারেনি। বড় কোম্পানিগুলো বড় গ্যাস ফিল্ড ফেলে কেন আমাদের এখানে আসতে চাইবে?
ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, পৃথিবীর মধ্যে বিপর্যয় এসেছে, এটাই শেষ না আরও আসতে পারে। উন্নত দেশও তাদের জ্বালানির দাম বাড়িয়েছে। জার্মানি পুরনো কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু করছে। আমরা যখন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র করলাম, পরিবেশবাদীরা বললো পরিবেশ শেষ করে দিলাম। আমাদের প্রযুক্তি উন্নত প্রযুক্তি এতে পরিবেশের ক্ষতি হবে না। অনেকে শতাংশ বলেন, শতকরা জিনিসটা ব্যবহার করবেন না। জার্মানিতে ৬০ হাজার, আমেরিকায় ২ লাখ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কয়লা দিয়ে উৎপাদন করা হচ্ছে।
আলোচনা সভায় বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, বঙ্গবন্ধু যখন গ্যাস ফিল্ডগুলো কিনেছিলেন সেই সময়কার আর্থিক অবস্থা বিবেচনায় অনেক টাকা। এমন একটি সাহসী সিদ্ধান্ত পাওয়া যায় কেবল দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতার কাছ থেকে। কেউ কিন্তু খাদ্য না কিনে গ্যাস ফিল্ড কিনেছিলেন। তখন কিন্তু গ্যাসের তেমন ব্যবহারও ছিল না।
তিনি বলেন, বিশ্বের যে আঘাতটা এসেছে, বঙ্গবন্ধুর ওই সিদ্ধান্ত পথ দেখাবে, সাহস যোগাবে। আমাদের নিজেদের খাদ্য রয়েছে বলে অনেকটা ভালো আছি। অনেক দেশ খুবই খারাপ অবস্থায় রয়েছে। আমরা যদি সকলে একসঙ্গে ধৈর্যের সঙ্গে মোকাবিলা করতে পারি, তাহলে অবশ্যই সংকট কাটিয়ে উঠতে পারবো। আমাদের প্রচুর সম্পদ রয়ে গেছে, সেগুলো নিয়ে যদি কাজ করতে পারি অবশ্যই মোকাবেলা করতে পারবো। দ্বিধাদ্বন্দে না থাকিয়ে কাজে ঝাপিয়ে পড়তে হবে।
জ্বালানি বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মাহবুব হোসেন সভাপতির বক্তব্যে বলেন, জ্বালানি খাতকে অস্থিতিশীল করতে একটি গ্রুপ সক্রিয়। তারা এখনও অপচেষ্টায় লিপ্ত। কোনো কথায় বিভ্রান্ত না হয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যোগাযোগ করবেন। অবশ্যই সঠিক তথ্য পাবেন।