ইসরায়েলের ড্রোন হামলায় নিহত হয়েছেন গাজা উপত্যকার ফুটবলার মুহান্নাদ আল-লী। তিনি ছিলেন ম্যাগাজি শরণার্থী শিবিরের বাসিন্দা এবং খাদামাত আল-ম্যাগাজি ক্লাবের তারকা খেলোয়াড়। বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে ফিলিস্তিন ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, সোমবার মুহান্নাদের বাসায় ইসরায়েলি ড্রোন হামলা চালানো হয়। হামলায় একটি ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি তার শোবার ঘরে আঘাত করে। মাথায় মারাত্মক জখম ও রক্তক্ষরণে আক্রান্ত হন তিনি। এরপর টানা কয়েকদিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে বৃহস্পতিবার সকালে তিনি মারা যান।
মুহান্নাদের ফুটবল ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল খাদামাত আল-ম্যাগাজির যুবদল থেকে। ২০১৬–১৭ মৌসুমে সিনিয়র দলকে তিনি ফিলিস্তিনি প্রিমিয়ার লিগে তুলে আনেন। এরপর খেলেন শাবাব জাবালিয়া ক্লাবে। ২০১৮–১৯ মৌসুমে তার নৈপুণ্যেই দলটি লিগের রানার্সআপ হয়।
একপর্যায়ে তিনি গাজা স্পোর্টস ক্লাবে যোগ দেন। তবে হাঁটুর লিগামেন্ট ছিঁড়ে গিয়ে দীর্ঘ সময় মাঠের বাইরে থাকতে হয় তাকে। পরে আবার নিজের পুরোনো ক্লাব খাদামাত আল-ম্যাগাজিতে ফিরে খেলায় ফেরেন।
ইসরায়েলি আগ্রাসনের সময় মুহান্নাদ গাজা থেকে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন। তার স্ত্রী যুদ্ধ শুরুর কিছুদিন আগে কাজের সূত্রে নরওয়েতে যান। সেই যুদ্ধকালেই ঘরে বসে তাদের সন্তান জন্ম নেন।
স্ত্রী ও নবজাতক সন্তানের কাছে যেতে চেয়েছিলেন মুহান্নাদ। কিন্তু নিরাপদ কোনো পথ না থাকায় তা সম্ভব হয়নি। শেষ পর্যন্ত নিজের সন্তানকে জীবনে একবারও দেখা হয়নি তার।
ফিলিস্তিন ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরায়েলি অভিযান শুরুর পর এখন পর্যন্ত ৫৮৫ জন ক্রীড়াব্যক্তিত্ব নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ২৬৫ জন ছিলেন ফুটবল সংশ্লিষ্ট। নিহতদের সেই দীর্ঘ তালিকায় এবার যুক্ত হলো তরুণ ফুটবলার মুহান্নাদ আল-লীর নাম।