মো.খোকন, নেত্রকোণা প্রতিনিধি: নেত্রকোণার পূর্বধলায় এক পিতা তার দ্বিতীয় পক্ষের সন্তানদের সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগ উঠেছে৷ বঞ্চিত স্ত্রী-সন্তানদের অধিকার আদায়ের দাবিতে তাদের পক্ষে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী।
বুধবার (০৮ ফেব্রুয়ারী) বেলা ২টার দিকে খলিশাউড় ইউনিয়নের বহেরাকান্দা গ্রামের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে এ মানববন্ধনের আয়োজন করেন এলাকাবাসী।
ভুক্তভোগী নারী মোছা.ফাতেমা খাতুন। অভিযোগ উঠেছে তার স্বামী মো. হারেজ আলী নিজের সব সম্পত্তি প্রথম পক্ষের স্ত্রী-সন্তানদের উইল করে দিচ্ছেন। এতে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন দ্বিতীয় পক্ষের সন্তানরা। এ পক্ষে তার চার সন্তান রয়েছে।
এ বিষয়ে স্থানীয়রা বলেন, মো. হারেজ আলীর দ্বিতীয় স্ত্রী ফাতেমা খাতুনের ঘরে চার সন্তান রয়েছে। দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী-সন্তানদের তিনি বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছেন৷ এতে মোছা. ফাতেমা খাতুন বাবার বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে দারিদ্র্যের সাথে সন্তানদের নিয়ে বসবাস করছেন। হারেজ আলী এখন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রথম স্ত্রীর সন্তানদেরকে তার যা কিছু আছে উইল করে দিয়ে দিবে।
তারা আরও বলেন, আমরা স্থানীয়ভাবে এ বিষয়টি অনেকবার সমাধানের চেষ্টা করলেও হারেজ আলী কোনো কিছুই মানতে নারাজ। আমরা একই গ্রামের বাসিন্দা হয়ে আজকের এই মানববন্ধনের মাধ্যমে অন্যায় অবিচারের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি ও প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী ফাতেমা খাতুন এর ছেলে মো. হারুন অর রশীদ বলেন, ‘আমার বাবা মো. হারেজ আলী। আমাদের পরিবারে আমিসহ আমরা চার ভাইবোন। আমার বাবার প্রথম পক্ষের আরও পাঁচ সন্তান রয়েছে। দীর্ঘদিন আগে আমার বাবা আমিসহ আমার তিন বোন ও মাকে তাঁর বাড়ি থেকে বের করে দিলে আমরা নানার বাড়িতে চলে আসি এবং সেখানেই আমরা লালিত পালিত হই।’
তিনি বলেন, আমার বাবা আগেও আমাদের কোনো ভরণপোষণ করেনি। বর্তমানে তাঁর সহায় সম্পত্তি প্রথম পক্ষের স্ত্রী সন্তানের নামে লিখে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। এ খবর পেয়ে আমরা সম্পত্তিতে আমাদের অংশ দাবি করি। এতে বাবা ক্ষিপ্ত হয়ে যান এবং আমাদেরকে তাঁর বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন। কয়েকদফায় স্থানীয়দের নিয়ে আমরা বৈঠকে বসলেও তিনি কারো কোন কথা না মেনে তাঁর সমস্ত সম্পত্তি প্রথম পক্ষের স্ত্রী সন্তানের নামে লিখে দেওয়ার চেষ্টা করেন। আমার বাবা তাঁর সম্পত্তি হতে আমাদেরকে বঞ্চিত করতে চাইছেন। আমার নামে থানায় মিথ্যা অভিযোগ করেছেন। এ বিষয়ে আমাদের আইনি সহায়তা প্রয়োজন। গ্রাম ও ইউনিয়নবাসী আজকের এই মানববন্ধন আয়োজন করেছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার দাবী করছি।’
অভিযুক্ত হারেজ আলীর ভাতিজা আব্দুল আজিজ বলেন, ‘আমার চাচা হারেজ আলী দুই বিয়ে করেছেন। ফাতেমা খাতুন তার দ্বিতীয় স্ত্রী। তাঁর এক ছেলে আর তিন মেয়ে। ছেলেমেয়ে ছোট থাকা অবস্থায় তিনি আমার চাচীকে বাড়ী থেকে বের করে দেন। ছেলেমেয়েরা অনেক কষ্টে বড় হয়েছে। হারেজ আলী তাঁদের সাথে অন্যায়ভাবে জুলুম নির্যাতন করেছেন। বিষয়টি নিয়ে গ্রামের মাতব্বরদের নিয়ে সুরাহা করতে অনেক চেষ্টা করেছি কিন্তু তিনি গ্রামের বিচার মানেন না। তিনি উল্টা তাঁদের উপর মিথ্যা হয়রানিমূলক মামলা করেছে।’