কুষ্টিয়ায় সপ্তম শ্রেণির এক নাবালিকা ছাত্রীকে প্রলোভন, যৌন হয়রানি, আপত্তিকর ছবি-ভিডিও ধারণ ও তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে শাহীন ইসলাম (৩০) নামে এক শিক্ষককে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
শনিবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে নোয়াখালী জেলার সুধারাম থানাধীন পৌরসভা হাউজিং সেন্টার রোডের সুরমা ভবনের সামনে থেকে র্যাব-১২, সিপিসি-১ কুষ্টিয়া এবং র্যাব-১১ সিপিসি-৩ নোয়াখালীর যৌথ অভিযানে তাকে গ্রেফতার করা হয়। শাহীন ইসলাম মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার সাহারবাটি গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে এবং কুষ্টিয়ার শাহীন ক্যাডেট স্কুলের বিজ্ঞান বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষক।
এর আগে ভুক্তভোগী ছাত্রীর মা আদালতে অভিযোগ দায়ের করলে ৭ আগস্ট কুষ্টিয়া সদর থানায় মামলা নং-৬ দায়ের করা হয়। মামলাটি পর্নোগ্রাফি আইন ২০১২ এর ৮(১)/৮(২)/৮(৩)/৫/৬ ধারায় দায়ের করা হয়।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, শিক্ষক শাহীন ইসলাম ভর্তির প্রলোভন দেখিয়ে ছাত্রীকে ধীরে ধীরে ফাঁদে ফেলে। গত ২৫ জানুয়ারি স্কুল শেষে ভাড়া করা বাড়িতে নিয়ে জোরপূর্বক ছবি ও ভিডিও ধারণ করে। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে নুড ভিডিও চাইতে থাকে এবং অস্বীকৃতি জানালে মানসিক চাপ সৃষ্টি করে পরিবারের গহনা ও টাকা-পয়সা হাতিয়ে নেয়। এক পর্যায়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপত্তিকর ছবি ছড়িয়ে দিলে ছাত্রী মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে ও আত্মহত্যার চেষ্টা করে।
পরবর্তীতে তাকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সুস্থ হয়ে ওঠে।
পুলিশ জানিয়েছে, আসামি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে ভুক্তভোগী পরিবারের ব্যক্তিগত ও সামাজিক মর্যাদা ক্ষুণ্ন করেছে। আদালত মামলাটি আমলে নেন।
র্যাব জানায়, আটককৃত আসামিকে নোয়াখালী সুধারাম থানার মাধ্যমে কুষ্টিয়া সদর থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।
জানতে চাইলে কুষ্টিয়া শাহীন স্কুলের পরিচালক উজ্জল হোসেন জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই।
এডুকেয়ার আইডিয়াল স্কুলের পরিচালক রাসেল ইসলাম বলেন, বিষয়টি শুনেছি, যতটুকু বুঝেছি তা খুবই দুঃখজনক। জড়িতদের আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
আব্দুর রহমান নামে এক অভিভাবক হতাশা প্রকাশ করে বলেন, যাদের উপর ভরসা করে বাচ্চাদের স্কুলে রেখে যাই, তারাই যদি এমন ন্যাক্কারজনক কাজ করে তাহলে কাকে ভরসা করবো? এ ঘটনায় কঠিন থেকে কঠিনতর শাস্তির ব্যবস্থা করে, দৃষ্টান্ত স্থাপন করা দরকার। ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটানোর সাহস না পায় কোন শিক্ষক। এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলে, শিক্ষক সমাজের সাথে ছাত্র সমাজ ও পরিবারের দূরত্ব তৈরি হবে যা শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধংস্ব করে দিবে। তিনি শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, একজন শিক্ষার্থী এমন ঘটনা প্রকাশ করেছে, না জানি কত কমলমতি শিক্ষার্থী এমন যৌন হয়রানীর স্বীকার। যারা লোকলজ্জার ভয়ে মুখ খুলতে সাহস করে না।