হঠাৎ-ই মধ্যরাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় শুরু হয়ে যায়। চিত্রনায়ক শরিফুল রাজ, অভিনেত্রী সুনেরাহ বিনতে কামাল, তানজিন তিশা ও নাজিফা তুষির একান্ত সময়ের কিছু ছবি ও ভিডিও ফাঁস হয়ে পড়ে রাজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে। এরপর দুদিন ধরে শোবিজ পাড়া ও সোশ্যাল মিডিয়া চলতে থাকে মন্তব্য- পালটা জবাব। এবার নিরবতা ভেঙে এ বিষয়ে কথা বলেছেন এই অভিনেতা। তিনি দাবি করেন, তিনি এই কাজ করেননি। কে বা কারা এমন কাণ্ড ঘটিয়েছে, তাও তিনি জানেন না।
চিত্রনায়িকা পরীমনি একইসঙ্গে সরব হয়ে পড়েন এ ইস্যুতে। কারণ রাজের স্ত্রী হয়ে চুপচাপ সহ্য করা সম্ভব ছিল না। সেইসঙ্গে ছবি-ভিডিও ফাঁস হওয়ার পর ২৯ মে শেষ রাতে সুনেরাহ বিনতে কামাল একটি স্ট্যাটাস দেন। সেখানে তার অভিযোগের তীর ছিল পরীর দিকে। যদিও নাম উল্লেখ করেননি ‘ন ডরাই’ খ্যাত অভিনেত্রী। কিন্তু কারও বুঝতে বিন্দুমাত্র বেগ পেতে হয়নি পরীকে নিয়েই এমন কথাবার্তা।
এর পর বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিস্ফোরক সব মন্তব্য করেছেন পরীমণি। তার দাবি, গত দশ দিন ধরেই রাজ তার সঙ্গে নয়, বরং সুনেরাহর সঙ্গেই থাকছেন! তাদের বন্ধুত্ব, সম্পর্ক নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন রাজের স্ত্রী পরী।
ঘটনার দুই দিন পার হওয়ার পর অবশেষে নীরবতা ভেঙে কথা বলেছেন ঘটনার কেন্দ্রে থাকা চরিত্র শরিফুল রাজ। অনুসারীদের উদ্দেশে নিজের বার্তা জানিয়েছেন তিনি। সেখানে সুনেরাহ-তিশা-তুষির কাছে দুঃখও প্রকাশ করেছেন তাদের বন্ধু এই অভিনেতা। কিন্তু কোথাও একবারও উচ্চারণ করেননি পরীর নাম!
চিত্রনায়ক রাজের ভাষ্য, নিশ্চয়ই আপনাদের প্রত্যেকেরই এমন অনেক বন্ধু রয়েছে- যাদের সাথে আপনারা আভিধানিক শব্দে কথা বলেন না, একসাথে পথ চলার সময় ভবিষ্যৎ ভাবনা নিয়ে পথ চলেন না। যাদের সাথে অনেক বেফাঁস কথা বলেন, কারণ বন্ধুত্ব তো এমনই। লিঙ্গ, বর্ণ, বয়সসহ সকল সীমারেখার ওপরে মানুষের বন্ধুত্ব। কিন্তু সমস্যা হয়, যখন কেউ অসৎ উদ্দেশ্যে বন্ধুত্বের মতো সম্পর্কের মাঝখানে লৈঙ্গিক পরিচয়ের সীমারেখা টেনে, ব্যাপারটাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে চায়। যখন কেউ বন্ধুদের মধ্যকার দ্বিধাহীন আড্ডার আলাপ ‘টক অব দ্যা টাউন’-এ পরিণত করে। আমিও তেমনই এক সমস্যায় পড়েছি।”
কর্মব্যস্ততার মাঝে এমন ঘটনায় হতবাক রাজ বললেন, আমি গত কয়েকদিন ধরে সিনেমার ডাবিং নিয়ে ব্যস্ত। আমার সিনেমার কিছু গল্পের স্ক্রিপ্ট রিডিং করার কথা, এইগুলা নিয়েই আমি ঠিকমতো সময় দিতে পারছি না। যখনই সময় পাচ্ছি গল্পের ভিতরে ঢুকে যাচ্ছি, তার মধ্যে হঠাৎ করে কে বা কারা এসব করে আমাকে হেনস্তার শিকার করছে, যা ভাবতেই আমি হতবাক হয়ে গেলাম। আমাকে নিয়ে শেষ যতদিন থেকে নানাবিধ সত্য মিথ্যার মিশ্রণে ঘটনার চাউর করছে, আমি তার শুরু থেকেই নীরব ছিলাম। কিন্তু নীরবতা মানেই দূর্বলতা না।’
রাজ মনে করেন, তাকে হেনস্তা করার উদ্দেশ্যেই এসব ছবি-ভিডিও ফাঁস করা হয়েছে। রাজ বলেন, আমার ফেসবুক প্রোফাইলের পাসওয়ার্ড/অ্যাকসেস এমন কারও কাছে আছে অথবা হ্যাক করে কেউ আমার দীর্ঘকালের বন্ধু ও সহকর্মীদের সঙ্গে নিতান্ত বন্ধুত্বের আড্ডার ঘটনা লিক করে দেয়। যে বা যারা এই কাজ করেছে, তাদের উদ্দেশ্য ছিল আমাদের হেনস্তা করা। হয়ত তারা সফলও হয়েছে।
এই অভিনেতা বলেন, আমি আমার তিন বন্ধু ও সহকর্মীর কাছে শর্তহীন দুঃখ প্রকাশ করছি; যারা আমার খুব ভালো বন্ধু দীর্ঘ দিনের। সেই বন্ধুত্বের কোন লিঙ্গ নেই। আমার কারণে তাদের হেনস্তার শিকার হতে হলো বলে। আমার সকল শুভাকাঙ্ক্ষী, সমর্থক ও সমালোচকদের কাছেও আমি দুঃখ প্রকাশ করছি- বন্ধুদের আড্ডার ঘটনা নোংরা উদ্দ্যেশে স্প্রেড করে মিসলিড করা হয়েছে বলে।
সবশেষে দোয়া-ভালোবাসা চেয়ে রাজের প্রত্যাশা, বহুবার হোঁচট খেয়েই তো হাঁটতে শিখেছি! আবারও হোঁচট খেলাম। আপনাদের দোয়া ও ভালোবাসা সাথে থাকলে নিশ্চয় আরও পরিণত হবো, শিখবো অতীতের ভুল থেকে। আমাকে আপনাদের দোয়া ও ভালোবাসায় রাখবেন। কারণ আপনাদের সমর্থন ছাড়া একজন শরিফুল রাজ কিছুই নয়।