সমালোচনার মুখে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) সমাজবিজ্ঞান বিভাগের নিয়োগ বোর্ড স্থগিত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. শওকাত আলী।
জানা যায়, ইউজিসির নির্দেশ অমান্য করে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) প্রশাসন শিক্ষক নিয়োগের বোর্ড আয়োজন করছেন। পরবর্তীতে এমন একটি সংবাদ প্রকাশ করা হলে এ নিয়োগ বোর্ড স্থগিত করা হয়৷
সূত্র জানায়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের জন্য অনুসরণীয় গাইডলাইনসহ একটি পরিপত্র গত ২৮ মে ইউজিসি জারি করেন। ইউজিসির অর্থ, হিসাব ও বাজেট শাখার পরিচালক রেজাউল করিম হাওলাদার স্বাক্ষরিত সেই পরিপত্রে স্পষ্টভাবে খণ্ডকালীন ও শিক্ষা ছুটির বিপরীতে শিক্ষক নিয়োগ না দিতে বলা হয়। আর শিক্ষক নিয়োগ দিলেও সেক্ষেত্রে অবশ্যই মঞ্জুরি কমিশনের পূর্বানুমিত নিতে হবে। অন্যথায় এ খাতে বাজেট বরাদ্দ দেওয়া হবে না বলেও পরিপত্রে সতর্ক করা হয়।
এদিকে এই পরিপত্র জারি সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ইউজিসিকে উপেক্ষা করে সমাজবিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষা ছুটির বিপরীতে একজন শিক্ষককে নিয়োগ প্রদানের জন্য প্রার্থীদের এডমিট কার্ড ইস্যু করেন। যাদের আগামী রোববার বিভাগে নিয়োগ দেয়ার কথা রয়েছে।
এছাড়া জানা যায়, উপাচার্যের নিজ ক্ষমতায় এই নিয়োগ বোর্ডে তার ঘনিষ্ঠ জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুনকে বোর্ডের এক্সপার্ট হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন, যা সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সাথে সামঞ্জস্য নেই ।
সমাজবিজ্ঞান সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বোর্ডে না রেখে জাপানিজ স্টাডিজের শিক্ষককে বোর্ডে রাখায় নিয়েও তৈরি হয়েছে বিতর্ক।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে দেরিতে প্রবন্ধ প্রকাশ করেও সঠিক সময়ে প্রকাশ দেখিয়ে পদোন্নতি নিয়ে চাকরি স্থায়ীকরণের অভিযোগ রয়েছে।
গত ১৮ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান বরাবর এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন একই বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান সহযোগী অধ্যাপক মো. জাহাঙ্গীর আলম। এছাড়াও তিনি আওয়ামী পন্থি শিক্ষকদের সংগঠন নীল দলের সদস্যও ছিলেন।
আগামী রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ বোর্ডের আয়োজন করা হয়েছে।
ইউজিসির পরিপত্র উপেক্ষা করে সমাজবিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের ব্যাপারে উপাচার্য ড. মো. শওকাত আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা ইউজিসির কাছে চিঠি পাঠিয়েছি।
অনুমোদন দিয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা অনুমোদন দিবেন। ২৮ তারিখ মিটিং আছে৷
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক নিয়োগে এক্সপার্ট কেন জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি সমাজবিজ্ঞানেরই মানুষ, অনার্স মাস্টার্স সমাজবিজ্ঞানেই করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে খোঁজ নিলেই জানতে পারবেন। কিন্তু তিনি জয়েন করেছেন জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগে।
এ ব্যাপারে ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি তো সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় দেখি না। আমি বেসরকারি বেশি দেখি। এই ব্যাপারে তানজিম উদ্দিন স্যার ভালো বলতেন পারবেন উনি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় দেখেন। তবে এখানে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের বোর্ডে অবশ্যই সমাজবিজ্ঞানের এক্সপার্টকে রাখা উচিত। এখন আমি জানি না কেন এখানে জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষককে রাখা হয়েছে।