বরগুনার তালতলীর শুভসন্ধ্যা সমুদ্র সৈকতে গোসল করতে নেমে নিখোঁজ হওয়া এনএসআই কর্মকর্তাসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রায় ৫ ঘণ্টা চেষ্টার পর তাদের উদ্ধার করা হয়েছে।
বুধবার(১৩ জুলাই) স্ত্রী, ২ সন্তানসহ একই পরিবারের ৫ জন সাগরের মোহনায় গোসল করতে নেমে স্রোতে সবাই ডুবে যায়।
কিছুসময় পর স্ত্রী ও দুই ছেলেকে স্থানীয়রা মুমূর্ষু অবস্থায় জীবিত উদ্ধার করতে পারলেও নিখোঁজ হয়ে যান এনএসআই কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা কাদের (৪০) ও স্ত্রীর বোনের মেয়ে জুঁই (১৮)। এরপর দীর্ঘ সময় চেষ্টা করে ডুবুরি দল তাদের মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে। বুধবার দুপুরের দিকে শুভসন্ধ্যা সৈকতে এ ঘটনা ঘটে।
মারা যাওয়া মোস্তফা কাদের জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) জুনিয়র ফিল্ড অফিসার হিসেবে বরগুনায় কর্মরত ছিলেন। জীবিত উদ্ধারকৃতরা হলেন– মোস্তফা কাদেরর স্ত্রী সেলিনা সিকদার (৩৫), ছেলে মাহাতির মোহাম্মাদ (৯) ও আবদুল করিম (১৬)।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, এসআই কর্মকর্তা মোস্তফা কাদের বরগুনায় চাকরি করার সুবাদে ঢাকা থেকে স্ত্রী, দুই ছেলে, তার স্ত্রীর বোনের মেয়ে জুঁইকে নিয়ে ঈদের ছুটিতে বরগুনায় আসেন। বুধবার সকালে তারা পরিবারের সবাই শুভসন্ধ্যা সমুদ্রসৈকতে ঘুরতে এসে সবাই মিলে সমুদ্রে গোসল নামেন।
গোসলে নেমে ঢেউয়ে তোড়ে মুহূর্তের মধ্যে সমুদ্রের মাঝে চলে যায় সবাই। খবর পেয়ে স্থানীয়রা দ্রুত তাদের উদ্ধারের জন্য সাগরের মোহনায় নেমে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে স্ত্রী ও ২ ছেলেকে উদ্ধার করেন।
পানিতে ডুবে নিখোঁজের খবর ছড়িয়ে পড়লে আশপাশ এলাকার শত শত জেলেসহ কোস্টগার্ড, নৌপুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও থানা পুলিশের কয়েকটি টিম উদ্ধারকাজে নেমে পড়েন। পরে বিকেল ৫টার সময় সাগরের মোহনা থেকে এনএসআই কর্মকর্তা মোস্তফা কাদের ও স্ত্রীর বোনের মেয়ে জুঁইয়ের লাশ উদ্ধার করে জেলেরা।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, এনএসআই কর্মকর্তা তার পরিবার নিয়ে সৈকতের কাছে সাঁতার কাটতে নামেন। এ সময় তারা সাগরের মোহনার বুকসমান পানির মধ্যে নেমে গোসল করেন। সবাই তখন একে অপরের হাত ধরে গোসল করছিলেন যাতে তারা কেউ বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে না পারেন।
আকস্মিক সাগরের উত্তাল জলরাশির ঢেউ তাদের ওপর আঁছড়ে পরার সাথে সাথে সবাই বিচ্ছিন্ন হয়ে ডুবে যান। গোসলে নামা এনএসআই কর্মকর্তা মোস্তফা কাদেরের পরিবারের কেউ সাঁতার জানতেন না। তাদের ডুবে যাওয়ার দৃশ্য দেখে অন্য পর্যটকরা উদ্ধারের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।
তালতলী ফায়ার সর্ভিসের স্টেশন অফিসার আহসান হাবিব জানান, গোসল করতে নেমে নিখোঁজদের মধ্যে স্ত্রী সেলিনা সিকদার (৩৫), ছেলে মাহাতির মোহাম্মাদ ও আবদুল করিমকে স্থানীয়রা জীবিত উদ্ধার করেছে। ৫ ঘণ্টা পর এনএসআই কর্মকর্তা মোস্তফা কাদের ও স্ত্রীর বোনের মেয়ে জুঁইকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।
তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাখাওয়াত হোসেন তপু জানান, মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা শেষে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।